সেই ওমর ফারুকের সন্ধান নিয়ে ধোঁয়াশা

এক দিনে তিন ডোজ করোনার টিকা নেওয়া ওমর ফারুকের বাড়ির খোঁজ মিলেছে। রাত পৌনে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভুইগড় এলাকায় গিয়ে তার বাড়ির খোঁজ পাওয়া যায়। ওই এলাকায় তিনি বাবা-মা, স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। তার বাবার নাম জামাল ভূঁইয়া। ওমর ফারুকের বোন ফারজানা আক্তার জানান, সৌদি যাওয়ার জন্য ওমর ফারুক টিকা নিতে গিয়েছিলেন।
বুধবার (২৮ জুলাই) রাতে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে এলাকাবাসীর ভিড়। প্রত্যক্ষদর্শী এলাকার লোক ও স্বজনরা প্রথমে দাবি করেন, ওমর ফারুকের অবস্থান নিয়ে তারা কিছুই জানেন না। এক পর্যায়ে তারা দাবি করেন, পিজি (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের মেডিকেল টিমের পরিচয় দিয়ে নারায়ণগঞ্জের বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এক দিনে তিনটি টিকা নেওয়া ওমর ফারুককে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওমর ফারুককে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেও প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনরা তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন। তারা বলেন, বুধবার দিনভর নিখোঁজ থাকার পর সন্ধ্যায় ওমর ফারুক তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছেন। ওমরের বোন ফারজানা আক্তার ও এলাকার লোকজন জানান, ওমর ফোনে জানিয়েছেন তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলেই রয়েছেন এবং তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এদিকে এলাকাবাসী ক্ষোভ জানিয়ে বলেছেন, ওমর ফারুক তিনটি টিকা নিয়ে নিশ্চয়ই কোনো অপরাধ করেননি। তিনি চোর কিংবা ডাকাত নন যে তাকে নিয়ে লুকোচুরি করতে হবে। তাকে চিকিৎসা করা হোক, কিন্তু তার চিন্তায় তার মা অসুস্থ হয়ে গেছেন। অন্তত তার বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
এছাড়া সোমবার (২৬ জুলাই) টিকা নেওয়ার পর থেকে ওমর ফারুকের শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো অবনতি ঘটেনি বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তারা জানিয়েছেন, সামান্য জ্বর অনুভব করা ছাড়া ওমর ফারুকের শরীরে তেমন কোনো সমস্যা তারা দেখেননি।
ওমর ফারুকের পাশের বাড়ির প্রত্যক্ষদর্শী এক প্রতিবেশী জানান, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুটি গাড়িতে করে ওমর ফারুককে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এসেছেন বলে জানান। তারা বলেন, ওমর ফারুক তিন ডোজ টিকা নেওয়ার কারণে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হবে ও পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
ওই প্রতিবেশী আরও জানান, ওমর ফারুকের বাবা জামাল উদ্দিনের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। তিনি এখন পিজি হাসপাতালে রয়েছেন। ওমর ফারুকের সঙ্গে তার দুলাভাই গোলাম সারোয়ার নাহিদও ওই গাড়িতে করে গিয়েছিলেন। কিন্তু পিজি হাসপাতালে পৌঁছার পর ওমর ফারুকের নামে হাসপাতালের টিকিট কাটতে বলায় তিনি কাউন্টারে যান। কয়েক মিনিট পরে ফিরে এসে তিনি গাড়ি দুটি আর খুঁজ পাননি। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় ওমরের বাবা জামাল উদ্দিনও ছুটে যান পিজি হাসপাতালে।
প্রতিবেশীরা ওমরের স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, ওমর ফারুক তার বাবা জামাল উদ্দিনের সঙ্গে রাত ৮টার দিকে কথা বলেছেন। ওমর জানিয়েছে, তাকে পিজি হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এসএসএইচ