এবার স্বাস্থ্য সহকারীকে পেটালেন সেই চেয়ারম্যান

সালিস বৈঠকে কিশোরীকে বিয়ে করা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আলোচিত চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার এবার এক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কর্মীকে পিটিয়েছেন। শনিবার (০৭ আগস্ট) বেলা ১১টায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, চেয়ারম্যানের ইচ্ছানুযায়ী করোনার টিকা না দেওয়ায় কিল ঘুষি আর লাথি মেরে অজ্ঞান করে দেন স্বাস্থ্য কর্মী আল-আমিন সিকদারকে। এমনকি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য পরির্দশক তাসলিমা নাজনিন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) প্রশান্ত কুমার সাহাকে।
আল-আমিন সিকদার ওই ইনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি কনকদিয়া ইউনিয়নের ঝিলনা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারেক সিকদারের ছেলে।
আল আমিন সিকদার বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্র্রেশন করে আমরা কনকদিয়া ইউনিয়নে ৬০০ জনকে করোনার টিকা দেবো। এ জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করে কার্যক্রম শুরু করি। কিন্তু চেয়ারম্যান বেলা ১১টার দিকে এসে আমাদের বলেন, যারা ভ্যাকসিন নিতে আসছে তাদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি রেখে ভ্যাকসিন দিয়ে দেন।
আমি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রশনের কথা বললে তিনি (শাহীন চেয়ারম্যান) ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে দুই হাত দিয়ে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি এবং লাথি মারেন। আমি অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যাই। একপর্যায়ে আমার সহকর্মীদের সেবায় সুস্থ হয়ে উঠি। এরপর শুনি তাসলিমা আপা (ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য পরির্দশক) ও ইউএইচও স্যারকে গালাগালি করেছেন তিনি।’
তাসলিমা নাজনিন বলেন, ‘যে অশ্লীল ভাষায় আমাকে আর ইউএইচও স্যারকে গালাগালি করেছে তা মুখে শোভা পায় না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘আমার স্বাস্থ্যকর্মী আল আমিন সিকদার ভ্যাকসিন কার্যক্রম শেষ করে আমাকে রাতে ফোনে জানিয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে সরকারি বিধি অনুযায়ী আইনী ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, ‘নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। যারা আইডি কার্ড নিয়ে আসবে তারা টিকা পাবে। অথচ এখানে টিকা দিতে এসে স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে টিকা দিচ্ছে।বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ায় আমি এর প্রতিবাদ করেছি। কাউকে মারধর কিংবা গালাগালি করার অভিযোগ সত্য না।
উল্লেখ্য, ২৫ জুন সালিস বৈঠকে এক কিশোরীকে জোর করে বিয়ে করে ব্যাপক আলোচিত হন চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার। এর আগে একাধিক সরকারি কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে মারধর করে ব্যাপক সমালোচিত হন। সে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি পরপর দুবার নৌকা প্রতীক নিয়ে কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
এসপি