রামেক হাসপাতালে আরও ১১ জনের মৃত্যু

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে আরও ১১ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে করোনায় ৯ জন, উপসর্গ নিয়ে একজন এবং করোনা নেগেটিভ হয়ে একজন মারা গেছেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে শনিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে তারা মারা যান। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে নাটোরের চারজন, রাজশাহীর তিনজন, নওগাঁর একজন এবং কুষ্টিয়ার একজন করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন রাজশাহীর একজন। আর করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় নওগাঁর একজন মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ চারজন মারা গেছেন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ)। এ ছাড়া ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন, ১ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন এবং ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন।
পরিচালক আরও জানান, শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১৩ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ৩৩০ জন। এক দিন আগেও এই সংখ্যা ছিল ৩২৫।
বর্তমানে রাজশাহীর ১৪৭ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩৭ জন, নাটোরের ৫৫ জন, নওগাঁর ৩৩ জন, পাবনার ৪৪ জন, কুষ্টিয়ার সাতজন, চুয়াডাঙ্গার একজন, জয়পুরহাটের একজন, সিরাজগঞ্জের একজন, মেহেরপুরের একজন, বগুড়ার একজন এবং দিনাজপুরের একজন।
হাসপাতালে করোনা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৭৯ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৯০ জন। করোনা ধরা পড়েনি ভর্তি ৬১ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৫ জন। এই এক দিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১৪ জন।
এর আগে শুক্রবার (১৩ আগস্ট) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ১৮ জনের নমুনায়।
একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ৩৫০ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪১ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ২৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ, জয়পুরহাটের ১২ দশমিক ২০ এবং নওগাঁর ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ২০৩ জন। এর মধ্যে করোনায় ৭৯ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ৯৮ জন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুলাই পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ২ হাজার ৫১১ জন।
এই ১৫ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসপি