রিকশায় বসেই ভোট দিলেন ৯৩ বছরের বৃদ্ধ

৯৩ বছরের বৃদ্ধ সরমেন্দ্রনাথ কর্মকার। বয়সের ভারে এখন চোখে কম দেখেন। তবে রিকশায় চড়ে বগুড়ার শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে ভোট দিতে আসেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার জন্য রিকশায় বসেই ভোট দিয়েছেন। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে ছেলে বলাই কর্মকারের সঙ্গে ভোট দিতে শেরপুর টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে আসেন সরমেন্দ্রনাথ কর্মকার। এই কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নেই বললেই চলে।
কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল জলিল জানান, ৫নং ওয়ার্ডের ভোটগ্রহণ চলছে। এই ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২২৯৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১৯৩ জন আর নারী ভোটার ১১০৪ জন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে বগুড়ার শেরপুর পৌর নির্বাচনের ১নং ওয়ার্ডে ভোটকেন্দ্র উলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রের চিত্র উল্টো। এই কেন্দ্রটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও সেখানে ভোটারদের ভিড় চোখে পড়ার মত।
এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আনিসুর রহমান জানান, এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ২২৮৯ জন। নারী ভোটার ১২১৪ জন ও পুরুষ ভোটার ১০৭৫ জন। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে।
বগুড়ার শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মোট চারজন, কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার, বিএনপির দলীয় ধানের শীষের প্রার্থী স্বাধীন কুমার কুন্ডা, বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ প্রতীক নিয়ে জানে আলম খোকা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী ইমরান কামাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৮৭৬ সালের ১ এপ্রিল ১০ দশমিক ৩৯৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত এই শেরপুর পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ২৩ হাজার ৭৫৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৪১৫ জন ও নারী ভোটার ১২ হাজার ৩৩৯ জন। ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১১টি ভোট কেন্দ্রে ব্যালটের মাধ্যমে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিগত এক সপ্তাহের মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী মিছিলে হামলা-মারধর, কার্যালয় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, বিএনপির বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীর কার্যালয় ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত এক কাউন্সিলর প্রার্থীর কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার মধ্যে কেবল দুটি ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আছিয়া খাতুন জানান, শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে মোট ১১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৯টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে।
বগুড়ার শেরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিশেষ ফোর্সের টহল অব্যাহত রয়েছে। এই পৌরসভার ৯টি ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ৫ জন পুলিশ সদস্যসহ ১৩ জন ও সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ৩ জন পুলিশসহ ১১ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। অবাধ-সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে প্রশাসন বদ্ধ পরিকর।
আরএআর