ফতুল্লার সেই মসজিদ খোলার মিলল অনুমতি

জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে ৩৪ জন প্রাণহানির ঘটনার প্রায় ১ বছরের মাথায় খুলে দেওয়া হচ্ছে ফতুল্লার তল্লার বায়তুস সালাত জামে মসজিদটি। রোববার (২৯ আগস্ট) জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল গফুরের কাছে অনুমতিপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।
তবে মসজিদটি ব্যবহারের জন্যে কমিটিকে অনুমতিপত্রে লিখিতভাবে ছয়টি শর্ত দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এসব শর্ত পূরণ হলেই কেবল ওই মসজিদে নিয়মিত নামাজের আয়োজন করা যাবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
শর্তগুলো হলো মসজিদে একাধিক দরজা রাখার ব্যবস্থা ও আপাতত মসজিদটিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ (এসি) যন্ত্রের ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে, বিদ্যুতের প্যানেল বোর্ড মসজিদ ভবনের বাইরে অথবা বারান্দায় বসাতে হবে, ৩ মাস পর পর অনুমোদিত প্রকৌশলী ও এবিসি লাইসেন্সপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান দ্বারা পরীক্ষা করতে হবে।
এছাড়া মসজিদের বিদ্যুৎসংক্রান্ত সব কার্যক্রমের সঠিকতা নিশ্চিত, মসজিদের পাশে গ্যাসলাইন নেই অথবা গ্যাস লাইন সঠিক আছে মর্মে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ থেকে প্রত্যয়নপত্র, প্রতিটি তলায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদি রাখতে হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এবং তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথভাবে মনিটরিং করাসহ এসব শর্তাবলি পালন নিশ্চিত করতে হবে।
জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ আরও বলেন, মসজিদ খোলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের চিঠি চাওয়া হয়েছিল। দপ্তরগুলো এই বিষয়ে ইতিবাচক সুপারিশ করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মসজিদ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। মসজিদ সংস্কার করে যেকোনো সময় মুসল্লিরা নামাজের আয়োজন করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর রাতে এশার নামাজ চলাকালীন উপজেলার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ৩৪ জন মারা যান। আহত হন আরও কয়েকজন। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস, ডিপিডিসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে মসজিদের অবকাঠামো নির্মাণে ত্রুটি, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ, তিতাসের গ্যাস লাইনে লিকেজের বিষয়টি ওঠে আসে। মসজিদের অভ্যন্তরে জমে থাকা গ্যাস ও বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে এই ধরনের ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উলেখ করা হয়।
এই ঘটনায় দায়ের করা পুলিশের মামলায় মসজিদ কমিটির সভাপতি, তিতাস ও ডিপিডিসির সংশ্লিষ্ট কয়েকজন গ্রেফতার হন। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে সিআইডি। অভিযোগপত্রে মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল গফুরকে প্রধান করে ২৯ জনকে আসামি করা হয়।
তবে সরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের আসামি করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি না পাওয়ায় এই মামলায় গ্রেফতার তিতাসের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অভিযোগপত্রে আসামির তালিকায় সংযুক্ত করা হয়নি।
রাজু আহমেদ/এমএসআর