১২৬ নিরীহ ব্যক্তিকে হত্যা করে হানাদাররা

৩১ আগস্ট শ্রীরামসি গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি দল তাদের এদেশীয় দালালদের সহযোগিতায় সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামসীতে দুটি জায়গায় দাঁড় করিয়ে ১২৬ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে পেছন দিক থেকে গুলি করে হত্যা করে।
মর্মস্পর্শী হত্যাকাণ্ডের পর হানাদার বাহিনী শ্রীরামসী গ্রাম ও বাজারের প্রায় ৩০০ ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। আগস্টের এই দিনে শহীদদের স্বজনরাসহ পুরো এলাকাবাসী কাঁদেন।
স্থানীয়রা জানান, মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোয় জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসী বাজারে পাকিস্তানি হানাদারদের কয়েকজন দালাল নৌকা নিয়ে এসেছে শুনে গ্রামবাসী খেপে যায়। এলাকাবাসীর মনোভাব বুঝতে পেরে দ্রুত এলাকা ছেড়ে পালায় দালালরা।
এর কয়েক দিন পরই পাকিস্তানি হানাদারদের একটি দল সকাল নয়টায় শ্রীরামসী উচ্চবিদ্যালয়ে এসে দেশীয় দালালদের মাধ্যমে শান্তিরক্ষার জন্য স্কুলে সভা হবে বলে প্রচারণা চালায়। পুরো এলাকার মানুষ ঝামেলা এড়ানোর জন্য স্কুলে সমবেত হতে থাকে।
সকাল ১০টায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী উপস্থিত ১২৬ জন গ্রামবাসীকে দুই রশি দিয়ে একজনের সঙ্গে আরেকজনকে বেঁধে ওয়াজিদ উল্লার পুকুর পাড়ে ও শহীদ নজির মিয়ার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে মেশিনগান দিয়ে গুলি করে সবার বুক ঝাঁজরা করে দেওয়া হয়। শ্রীরামসী শহীদ স্মৃতি সংসদ প্রতিবছরের মতো এবারও ৩১ আগস্ট দিনভর নানা কর্মসূচি পালন করবে।
শ্রীরামসী শহীদ স্মৃতি সংসদের সাবেক সভাপতি নুর মোহাম্মদ জুয়েল ঢাকা পোস্টকে বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজাকার আলবদরদের সহযোগিতায় শ্রীরামসীতে দুটি জায়গায় দাঁড় করিয়ে ১২৬ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে।
এই দিনটি প্রতিবছরই আমরা বিভিন্নভাবে স্মরণ করি। মহামারি করোনার কারণে সীমিত পরিসরে গতবারের মতো এবারও দিবসটি পালন করব আমরা। শ্রীরামসী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে এবার আলোচনা ও স্কুলভিত্তিক মেধা নির্বাচনী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশের জন্য যরা জীবন দিয়েছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে।
সাইদুর রহমান আসাদ/এনএ