মাগুরায় সার্ভার জটিলতায় শিক্ষার্থীদের ভর্তি-উপবৃত্তি অনিশ্চিত

জন্মসনদ পেতে দুর্ভোগে পড়ছেন মাগুরার চারটি উপজেলার ৩৬টি ইউনিয়নের নাগরিকেরা। সার্ভার জটিলতায় এ সংকট চলছে প্রায় ২৫ দিন ধরে। এতে মাগুরার চার উপজেলাতেই শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও উপবৃত্তি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিপাকে পড়ছেন এসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, জেলার মহম্মদপুর উপজেলার ১৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক হাজার ৭৩ জন শিক্ষার্থী এখনো জন্মসনদ জমা দিতে পারেনি। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তাদের ভর্তি-উপবৃত্তি।
শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ে ভর্তি-উপবৃত্তির ক্ষেত্রে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক। সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির কার্যক্রম রুপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশ থেকে ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন ‘নগদ’-এর মাধ্যমে প্রদান করতে হবে। শিওর ক্যাশে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক না থাকলেও নগদ পোর্টালে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু সার্ভার জটিলতার কারণে উপবৃত্তির তথ্য সঠিক সময়ে জমা দেওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এর আগে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত তথ্য জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে কেউ তথ্য জমা দিতে না পারায় আবার ২৫ তারিখ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
আমার ছেলের ভর্তির জন্য জন্মনিবন্ধন চেয়েছেন শিক্ষকরা। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তারা জন্মনিবন্ধন সনদ দিতে পারে না। সনদ না হলে নাকি ভর্তি-উপবৃত্তি কোনোটাই হবে না। এ নিয়ে আমি এক বিপাকে পড়েছি।
ওবায়দুর রহমান, শিক্ষার্থী মাহির বাবা
মহম্মদপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) জন্মসনদ নিতে আসা এক অভিভাবক বলেন, ১০ দিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদে ঘুরছি। কিন্তু জন্মসনদ পাইনি। তারা বলে সার্ভার ডাউন। এদিকে স্কুল থেকে স্যারেরা চাপ দিচ্ছেন।
উত্তর কুঠিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি-ইচ্ছুক মাহির বাবা ওবায়দুর রহমান বলেন, আমার ছেলের ভর্তির জন্য জন্মনিবন্ধন চেয়েছেন শিক্ষকরা। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তারা জন্মনিবন্ধন সনদ দিতে পারে না। সনদ না হলে নাকি ভর্তি-উপবৃত্তি কোনোটাই হবে না। এ নিয়ে আমি এক বিপাকে পড়েছি।
শ্রীপুর উপজেলা সদর ইউপির উদ্যোক্তা রমজান আলী জানান, তার পরিষদে কয়েক শ জন্মনিবন্ধন আবেদন জমা পড়েছে। সাত-আট দিন ঘুরেও জন্মনিবন্ধন সনদ বের করতে পারছি না।
মহম্মদপুর উপজেলা সদর ইউপির উদ্যোক্তা কৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, গভীর রাতে ও ভোরে সার্ভার খুলে দু-একটা জন্মনিবন্ধন করতে পারি। কোনো কোনো দিন তাও পারি না।
কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানান, স্কুলে ভর্তি হতে জন্মনিবন্ধন বাধ্যতামূলক। জন্মনিবন্ধন না পাওয়ায় অনেকেই সন্তানকে ভর্তি করাতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে মহম্মদপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ বলেন, আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সার্ভার ডাউন থাকায় জন্মনিবন্ধন পেতে সমস্যা হচ্ছে। সার্ভার আপডেটের কাজ শেষ হলে আশা করছি বিষয়টির সমাধান হবে।
এনএ