মানিকগঞ্জের ২০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই কোমলমতিদের পদচারণ

করোনাকালীন মানিকগঞ্জের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলে ৮৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। তবে রোববার থেকে (১২ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও বন্যার কারণে জেলার ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হয়নি। ফলে হতাশ শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা জাহান ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার অধিকারী ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, জেলার নদীতীরবর্তী এলাকা রয়েছে ৫০ কিলোমিটার। চলতি বছরে বর্ষা মৌসুমে কয়েক দফা পদ্মা ও যমুনা ভাঙনে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া বন্যায় শিবালয়, দৌলতপুর ও হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় পানি প্রবেশ করে।
গত সপ্তাহ থেকে জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় পানি কমতে শুরু করে। তবে চরাঞ্চলের ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বন্যার পানি নামলেও বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে এখনো কাদা রয়েছে। যে কারণে এসব বিদ্যালয়গুলো খুলতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। এদিকে অভিভাবকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ছেলেমেয়েরা বাড়িতে থাকতে থাকতে পড়ালেখার ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু তারা এখন স্কুলে যেতে না পেরে আরও ক্ষতির শিকার হবে।

দৌলতপুর উপজেলার ৫৭ নং চরকাটারি ডাক্তারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান বলেন, বন্যার পানি নেমেছে কিন্তু বিদ্যালয়ের আঙিনা এখন কাদাযুক্ত। এ কারণে ক্লাস শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত বিদ্যালয় খোলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একই উপজেলার ৩৩ নং চরকাটারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বিদ্যালয়ের আঙিনায় এখনো পানি বয়েছে। দীর্ঘদিন পরে বিদ্যালয় খুলছে, আমরা বিদ্যালয়ে পাঠদানে মুখিয়ে রয়েছি। আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই পাঠদান কার্যক্রম শুরু করতে পারব।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার অধিকারী বলেন, জেলায় মোট ৬৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যমুনা নদীপাড়ের দৌলতপুর উপজেলার হাটাইল, টুটিয়াম, আহুলিয়া, বহড়া, গাজীছাইল, মীর কুটিয়া,নিলুয়া এবং হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগর, সুতালড়িসহ চরাঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছিল। পানি চলে গেলেও উঠানে কাঁদা রয়েছে। এসব কারণে অন্তত ১৯টি প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো আজ খুলেছে। চলতি বছর হরিরামপুর উপজেলার সুতালড়ি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা জাহান বলেন, জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমকি মিলে ২৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার মধ্যে আজকে ২৩১টি খুলেছে। তবে জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারি উচ্চ বিদ্যালয়ের আঙিনায় বন্যার পানি না থাকলেও কাদা রয়েছে। এ কারণে ওই বিদ্যালয়টি খোলা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
সোহেল হোসেন/এনএ