বই পড়ে একঘেয়েমি কাটাচ্ছেন রোগীর স্বজনরা

অসুস্থ শরীর নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন রোগী। রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনেরও সময়টা ভালো যাচ্ছে না। কোনোভাবেই যেন সময় কাটছে না তাদের। রোগীর বিছানা আর হাসপাতালের বারান্দা করে সময় কাটাচ্ছেন স্বজনরা।
এমন মানুষের জন্য হাসপাতাল ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে লাইব্রেরি। রোগী ও রোগীর স্বজনেরা হাতের কাছেই পেয়ে যাচ্ছেন বই। যেগুলো থেকে জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি একঘেয়েমি ঝেড়ে ফেলে সময় কেটে যাচ্ছে তাদের।
এমন একটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। এখানে হাসপাতালের সেই চিরচেনা চিত্র রোগী নিয়ে ছোটাছুটি আর মন খারাপ করে বসে থাকার সঙ্গে দেখা যাচ্ছে লাইব্রেরিতে বসে রোগী আর স্বজনরা বই পড়ছেন। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের কারণে এখন তারা উপকৃত হচ্ছেন।

সরেজমিন মহম্মদপুর সাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেল, হাসপাতালের দ্বিতীয়তলায় একটি সুন্দর লাইব্রেরি স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে রোগী দেখতে আসা ৪-৫ দর্শনার্থী বসে বই পড়ছেন। লাইব্রেরির দেয়ালে লিখা আছে ‘জীবনে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন বই, বই এবং বই।’ তাছাড়া এই দেওয়ালে লিখা ‘একটি বই একশটি বন্ধুর সমান’ কথাটিই মনে করিয়ে দেয় এই লাইব্রেরি স্থপনের গুরুত্ব।
কথা হয় মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী স্বর্ণালী ইসলামের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘আমার দাদু অসুস্থ। তাকে এই হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। এখানে এসে লাইব্রেরি দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। তাই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা একটি বই পড়ছি।’ স্বর্ণালীর বাড়ি মহম্মদপুরের হরেকৃষ্ণপুর গ্রামে।

আপন কাকাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছেন মহম্মদপুরের নিখরহাটা গ্রামের সুমন মিয়া। তিনি বললেন, তিন দিন ধরে তাকে হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে। হাসপাতালে লাইব্রেরি থাকায় অবসর সময়ে তিনি বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে পেরে অত্যন্ত খুশি।
মাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন বালিদিয়া গ্রামের সুমাইয়া খাতুন। অনুভূতি প্রকাশ করেত গিয়ে হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সুমাইয়া বললেন, মন খারাপ থাকলেও সুযোগ মতো যে কেউ এখানে বই পড়তে পারছেন। এটা ভালো উদ্যাগ।
হাসপাতালে রোগীর খোঁজখবর নিতে আসা গোলাম রব্বানি হিরো বললেন, মহম্মদপুর হাসপাতলে একটি ব্যাতিক্রমধর্মী উদ্যোগ লাইব্রেরী স্থাপন। তাছাড়া এখানকার বিভিন্ন ধরনের বনজ, ফলজ ও ওষধী গাছ এই হাসপাতালকে আরোও দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে।
মহম্মদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক কাজী মো. আবু হাসান বলেন, লাইব্রেরি স্থাপন মহম্মদপুর হাসপাতালের একটি নতুন সংযোজন। রোগীর সঙ্গে আসা লোকজন যাতে একঘেয়েমিতে না ভোগেন তার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এমএসআর