ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডনে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন ফাহাদ
ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ব্রিটেনে লেখাপড়া করতে গিয়ে লাশ হয়ে দেশে ফিরলেন বার অ্যাট ল পড়ুয়া বাংলাদেশি ছাত্র ফাহাদ হোসেন প্রামাণিক (২৭)। হত্যাকাণ্ডের শিকারের দীর্ঘ ১ মাস পর গতকাল সোমবার রাতে ফাহাদের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।
পঞ্চগড় পৌর শহরের পূর্ব জালাসী এলাকায় ফাহাদের বাড়ি। তিনি ব্যবসায়ী নাজমুল প্রামাণিকের একমাত্র ছেলে। ফাহাদ ব্রিটেনের ব্রিস্টলে আইন বিষয়ে পড়তেন। ১২ সেপ্টেম্বর ব্রিটেনের ব্রিস্টল শহরের একটি বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ফাহাদ।
পরে ব্রিস্টল পুলিশ ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষ করে ১ মাস পর ১০ অক্টোবর ফাহারের পরিবারের কাছে লাশ পাঠায়। ৮ অক্টোবর বাদ মাগরিব তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয় ব্রিস্টলের মসজিদে। পরে একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশ হাইকমিশন লাশ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
ব্রিস্টল পুলিশের বরাত দিয়ে লন্ডন থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশি নিউজপোর্টাল রানারমিডিয়া২৪ডটকম লিখেছে, ফাহাদকে কেন হত্যা করা হলো তা এখনও জানা যায়নি। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে লোনাট ভ্যালেন্টাইন (২১) ও জ্যাকব (৪৫) নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আগামী বছরের ২২ মার্চ ফাইনাল ট্রায়ালে এ ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এদিকে, ফাহাদের মৃত্যুতে এক মাস ধরে শোকের ছায়া প্রামাণিক পরিবারে। লাশ বাড়িতে আসার পর স্বজনদের আহাজারি বেড়েছে কয়েকগুণ। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা নাজমুল প্রামাণিক।
জানা গেছে, ফাহাদ ২০১৯ সালে পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে ঢাকার ভূঁইয়া একাডেমিতে ভর্তি হয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। উচ্চশিক্ষা অর্জম করে ভালো আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ব্যারিস্টার অ্যাট ল ডিগ্রি নিতে ২০১৮ সালে তিনি ব্রিটেনে যান। লেখাপড়ার পাশাপাশি ফাহাদ জরুরি কোভিড-সেবা বিভাগে চাকরিও করতেন।
ফাহাদের বড় বোন নিলুফা ইসলাম বলেন, ফাহাদের সঙ্গে ৭ সেপ্টেম্বর মুঠোফোনে শেষ কথা হয়। কারও অসুস্থতার খবর জানতে পারলে ফাহাদ সহযোগিতা করত। আমার ভাই এভাবে চলে যাবে আমরা মেনে নিতে পারছি না।
গতকাল রাতে ফাহাদের লাশ পঞ্চগড়ে এসে পৌঁছলে আজ সকাল ১০টায় শহরের দারুল উলুম মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা হয়। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় সদর উপজেলার চাকলারহাট ইউনিয়নের নেকিপাড়ায় তার তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
রনি মিয়াজী/এমএসআর