বেড়ায় মাদক ব্যবসায়ীর হামলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসপাতালে

পাবনার বেড়া প্রেসক্লাবের সম্পাদক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি উজ্জল হোসেন ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের ওপর হামলা-মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকালে পৌর সদরের বৃশালিকা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধায় ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা বাদী হয়ে বেড়া মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন বৃশালিকা গ্রামের মৃত বাবরের ছেলে হেলাল প্রমাণিক (৫৫) হুমায়ুন প্রামাণিক হিটু (৫০), হেদায়েত রাঙ্গা (৪২), মাদক ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান মনির (৩৮)।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের ঘরের পাশ দিয়ে সামান্য পানি গড়িয়ে পড়ছিল। এতে মাদক ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান মনি এসে মুক্তিযোদ্ধাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকেন। আব্দুস সামাদ নিষেধ করলেও তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কিল-ঘুষি ও পাইপ দিয়ে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন।
এ সময় তার চিৎকারে তার বড় ছেলে বেড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল হোসেন এগিয়ে এলে মনির, তার তিন ভাই ও তাদের স্ত্রীরা বঁটি ও বাঁঁশ দিয়ে বাবা-ছেলেকে জখম করেন। তাদের হত্যা করার হুমকিও দেন। পরে আব্দস সামাদকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় বেড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ওসমান গনি তীব্র নিন্দা জানিয়ে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন।
বৃশালিখা গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা হেলাল এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে ঝামেলার সৃষ্টি করছেন। আপন ভাই মনিরুজ্জামান মনিকে দিয়ে রমরমা মাদকের ব্যবসা চালাচ্ছেন। মাদকের গডফাদার হয়ে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল সামাদ বলেন, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় সঠিক তদন্ত করে অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করেন তিনি।
বেড়া উপজেলার সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলী বলেন, যারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মারধর করে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ও কঠোর শাস্তির দাবি করছি।
বেড়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার ঢাকা পোস্টকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুর আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হওয়ার পর থানার ওসির সঙ্গে কথা বলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। একজন মুক্তিযোদ্ধা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাকে এভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
রাকিব হাসনাত/এনএ