ভেঙে গেল সেই দম্পতির সংসার

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আলোচিত ৪০-৪২ ইঞ্চি উচ্চতার সেই বামন দম্পতির সংসার অবশেষে ভেঙে গেছে। বিয়ের মাত্র সাত মাসের মাথায় গত ২০ অক্টোবর পারিবারিক সিদ্ধান্তে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। 

বর আব্বাস মণ্ডল শৈলকুপার আউশিয়া গ্রামের আজিবর মণ্ডলের বড় ছেলে। অন্যদিকে কনে মিম খাতুন একই উপজেলার লক্ষণন্দিয়া গ্রামের ইউনুস আলীর বড় মেয়ে।

আব্বাসের বয়স ৩০ হলেও উচ্চতা মাত্র ৪০ ইঞ্চি। পরিবারের বড় সন্তান খর্বাকৃতির হওয়ায় তার বিয়ের জন্য পিতা-মাতার চেষ্টার কোনো অন্ত ছিলনা। শেষ পর্যন্ত সন্ধান পেয়েছিল ১৮ বছর বয়সী মিম খাতুনের। যার উচ্চতা ছিল ৪২ ইঞ্চি।

পুতুলের মতো এ কনের সঙ্গেই মহাধুমধামে বিয়ে হয় আব্বাসের। এ বিয়ের ঘটনায় এলাকার মানুষ দারুণ খুশি হয়েছিল। বিয়ের সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারসহ স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এ দম্পতির জন্য ছিল সবার শুভকামনা। কিন্তু বিয়ের সাত মাস যেতে না যেতেই ভেঙে গেল তাদের সংসার।

এলাকায় গিয়ে জানা যায়, বিয়ের পিড়িতে বসার ইচ্ছে ছিল না আব্বাসের। ছন্নছাড়া আর বাউণ্ডুলে  হওয়ায় ভেঙে যায় তাদের সংসার। কপাল পুড়ল মিমের। বড় আশা করে মিমকে তার পরিবার বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু মাসের মাথায় বুধবার (২০ অক্টোবর) বিবাহ বিচ্ছেদ হয় এই দম্পতির।

তবে বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে আব্বাস মণ্ডলের সাথে কথা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে দুই পরিবারের সম্মতিতেই আমাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। 

আব্বাসের মা সাহিদা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার দুইটা ছেলে। বড়টা খর্বাকৃতির হলেও ছোট ছেলের উচ্চতা স্বাভাবিক। অনেক আগেই ছোট ছেলেকে বিয়ে করিয়েছি। কিন্তু বড় ছেলে আব্বাস বামন আকৃতির হওয়ায় তাকে নিয়ে চিন্তা করতাম। পরে লক্ষন্দিয়ার ইউনুস আলীর বড় মেয়ে মিমের সাথে তার বিয়ে দিই। বিয়ে দিতে পেরে চিন্তা দুর হয়েছিল। বউকে নিয়ে ছেলে সুখী হবে এমন আশা করেছিলাম। আব্বাস শুধু ঘুরে বেড়াই। কোনো কাজ করে না। এসব কারণে তাদের বিরোধ হলে আব্বাস বউকে তালক দেয়।

আব্বাসের পিতা আজিবর মণ্ডল বলেন, বড় আশা করে ছেলেকে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদে আমি মর্মাহত। আমরা চেয়েছিলাম তারা সুখী হোক।

৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. বকুল আলী বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, পৌর এলাকার আউশিয়া গ্রামের আজিবর মণ্ডলের ছেলে আব্বাস তেমন কাজ করতে পারে না। সে প্রতিবন্ধী কার্ডের মাধ্যমে ভাতা পায়। গত ৬-৭ মাস আগে বিয়ে করে। তবে শুনলাম আব্বাস বউকে তালাক দিছে। 

আব্দুল্লাহ আল মামুন/আরআই