প্রেমিক হত্যায় প্রেমিকাসহ দুজনের ফাঁসি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নবী হোসেন হত্যা মামলায় দুইজনকে ফাঁসি দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এ মামলায় দুই আসামিকে বেকুসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ১১ টায় কিশোরগঞ্জ ১ নম্বর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহিম এই রায় দেন। এ সময় আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কাজী নজরুল ইসলাম উপস্থিতি থাকলেও নিহত নবী হোসেনের প্রেমিকা সুমনা বেগম ওরফে শিলা পলাতক ছিলেন।
বেকুসুর খালাস পাওয়া দুইজন হলেন- মো. আশরাফুল হক রাসেল ও মো. শরিফ মিয়া।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া সুমনা বেগম ওরফে শিলা পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজেশ্বর গ্রামের মৃত মোহন পাঠানের মেয়ে ও কাজী নজরুল ইসলাম একই এলাকার কাজী মনির মাস্টারের ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, প্রথম স্ত্রীকে রেখে কয়েক বছর আগে নবী সুমনা বেগমকে বিয়ে করেন। ভৈরব শহরে তারা বাসা ভাড়া করে থাকতেন। কিন্তু কিছুদিন ধরে বাল্যবন্ধু নজরুলের সঙ্গে সুমনা পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। নজরুল মুঠোফোনে তাদের কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য ভিডিও করে রাখেন। পরে নবীকে সেই ভিডিও দেখানোর হুমকি দিয়ে সুমনার সঙ্গে মেলামেশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন নজরুল।
এদিকে, সুমনাকে ভরণপোষণের টাকা দিচ্ছিলেন না নবী। এ সকল কারণে নজরুলকে নিয়ে নবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সুমনা। ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর রাতে নবীকে বাসায় ডেকে আনেন সুমনা। তারপর রাত দুইটার দিকে নজরুল ঘরে ঢুকে চাপাতির আঘাতে নবীকে অজ্ঞান করে।
পরে দুই সহযোগীকে নিয়ে গলা কেটে নবী হোসেনকে হত্যা করে হাত, পা, মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ফেলেন। ২৫ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিজ গ্রাম বিজেশ্বরে পালিয়ে যান নজরুল ও সুমনা। সেখান থেকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
এদিকে, হত্যার পরের দিন নিহতের স্ত্রী বিলকিছ বেগম বাদী হয়ে ভৈরব থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি চারজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ ইমাম রায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জামিনে বেরিয়ে মামলার এক নম্বর আসামি সুমনা বেগম ওরফে শিলা পলাতক রয়েছেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আবদুর রউফ ও অ্যাডভোকেট জহুরুল হক।
এসপি