প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের সবার আগে ভ্যাকসিন নিতে বললেন ফখরুল

করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে জনগণের দুশ্চিন্তা ও বিভ্রান্তি দূর করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রী-এমপিদের সবার আগে ভ্যাকসিন নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, বিভিন্ন কারণে পৃথিবীজুড়ে এখনো মানুষের মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়ে সন্দেহ ও সংশয় রয়েছে। উন্নত দেশগুলো থেকে কিছু নেতিবাচক প্রচারণার কারণে এই ভীতি তৈরি হয়েছে। নতুন কোনো জিনিস যখন প্রয়োগ হয় তখন মানুষের মধ্যে ভীতি থাকে। এটা স্বাভাবিক। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মধ্যে আস্থা আনার জন্য অনেক দেশে প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রপ্রধানরা আগে করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সংশয় রয়েছে। জনগণের দুশ্চিন্তা ও বিভ্রান্তি দূর করতে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী ও এমপিদের সবার আগে ভ্যাকসিন নেওয়া দরকার।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুর সদরের পাগলা পীরের ভিন্ন জগতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনে রংপুর বিভাগীয় উদযাপন কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার যদি মানুষের আস্থা ফেরাতে না পারে তাহলে এই সমস্যা থেকে যাবে। অনেক চিকিৎসক বলেছেন আমি এখন ভ্যাকসিন নেব না। তার মানে তারাও সংশয়ে রয়েছেন। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা এই ভ্যাকসিন প্রয়োগে আরও বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে মতামত দিয়েছেন।
করোনা মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ সরকার আগেই ব্যর্থ হয়েছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার করোনা থেকে মানুষকে বাঁচাতে অবশ্যই পরাজিত হয়েছে। যেনতেন পরীক্ষার নামে তারা ফলাফল প্রকাশ করেছে। করোনা টেস্টের নামে তারা বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করেছে। যা বিভিন্ন পত্রিকা এবং গণমাধ্যম এসেছিল। এছাড়া ভ্যাকসিন বিষয়ে তারা লুকোচুরি খেলেছে। মূলত তারা সুশৃঙ্খল অবস্থান তৈরি করতে পারছে না।
কে ভ্যাকসিন পাবে কে পাবে না সে বিষয়ে কিন্তু এখন পর্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য কোনো রোডম্যাপ তৈরি করতে পারেনি সরকার। মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়নি। অথচ আমরা শুনছি বড় বড় ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন আগে পাবে। যারা বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তাদের জন্য কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির মহাসচিব
কুষ্টিয়ার হাইকোর্টে পুলিশ সুপারকে নিয়ে সতর্কমূলক বার্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তারা জনগণের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। ফলে তারা পুলিশ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আজকে আদালতের বিচারক কুষ্টিয়ার এসপিকে যে আদেশ দিয়েছেন, এজন্য আদালতকে ধন্যবাদ। এটাই সত্য; পুলিশ তার দায়িত্ব থেকে সরে গেছে। এখন দেশ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে গেছে, আদালতের নির্দেশেই তা স্পষ্ট।
নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো আস্থা নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, শুধু গণতান্ত্রিক দল বলে আমরা চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের ওপর আমাদের কোনো আস্থা নেই। এটি একটি পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন। আমরা বেশ কয়েক বার তাদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছি। আমরা আশা করি; সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে নির্বাচন হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (আসাদুল হাবিব দুলু, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক এমপি বিলকিস ইসলাম, রংপুর মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সামসুজ্জামান সামু, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু, রংপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রইচ আহমেদ।
এএম