নৌকাই যাদের একমাত্র ভরসা

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ধরলা নদীতে জগমনের চর নৌকাঘাট। এ নৌকাঘাট দিয়ে একটি মাত্র নৌকায় দীর্ঘদিন ধরে দড়ি টেনে পারাপার হচ্ছেন চার-পাঁচটি গ্রামের শত শত মানুষ। গ্রামগুলো হলো জগমনের চর, চর বড়াই বাড়ী, মন্ডলের হাট, টেপরির চর ও মোগল বাসা।
এসব চরের মানুষ ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে নৌকাই একমাত্র ভরসা। তা ছাড়া রাস্তা ও অন্য কোনো বাহন না থাকায় এ অঞ্চলের মানুষজন জরুরি কোনো রোগীকে দ্রুত জেলা শহরে নিতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, চার-পাঁচটি গ্রামের মানুষ সারাজীবন নৌকায় জগমনের চর নৌকাঘাট দিয়ে চলাচল করছে। প্রত্যেককে ঘাট দিয়ে পার হতে পাঁচ টাকা ভাড়া দিতে হয়। প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ মানুষ যাতায়াত করেছে। ঘাটের দুদিকে ওঠানামার জন্য সিঁড়ি না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।
চর বড়াই বাড়ি গ্রামের বৃদ্ধ হোসেন আলী বলেন, রাস্তা না থাকায় অনেক দূর বালুমাটি হেঁটে এসে নৌকায় পার হতে হয়। আবার বেশি রাত হলে নৌকার মাঝি থাকে না। নৌকা ছাড়া পার হওয়ার কোনো উপায় নাই।
জগমনের চর গ্রামের মাহাবুব জানান, জন্ম থেকেই নৌকায় চলাচল করে আসছি। নৌকা আমাদের একমাত্র ভরসা। রাস্তা না থাকায় বাড়ি থেকে প্রায় এক কিমি বালুমাটি হেঁটে এসে নৌকায় পার হতে হয়। প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে তিন-চারবার ঘাট পার হয়ে বাজারসহ জেলা শহরে যেতে হয়। এতবার পারাপার হওয়ার পর দেখা যায় দিনই শেষ হয়ে গেছে।
ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, আমার ওয়ার্ডের বেশির ভাগ মানুষ এ ঘাট দিয়ে চলাচল করে। এখানে মানুষের নৌকাই একমাত্র ভরসা। দিনের বেলা ঘাট দিয়ে যাতায়াত করতে কোনো সমস্যা হয় না, তবে রাতে মাঝেমধ্যে নৌকার মাঝি না থাকলে সমস্যায় পড়ে অনেকে।
ভোগডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নের জগমনের চর নৌকাঘাট দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ চলাচল করে। দিনের মধ্যে যাতায়াতে কোনো সমস্যা না হলেও রাতে পারাপারে সমস্যায় পড়ে চরাঞ্চলের এসব মানুষ।
এনএ