প্রতীক পেয়েই সংঘর্ষে জড়াল দুই প্রার্থীর সমর্থকরা, আহত ১০

পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রচারণার প্রথম দিনেই নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিশালিকা মহল্লায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, মেয়র পদে ৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দিলেও একজন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বর্তমান ৫ জন প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনই স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু পরিবারের সদস্য। ভোটের মাঠে তাদের লড়াই শুরু হয়ে গেছে।
যে পাঁচজন লড়ছেন তারা হলেন- বর্তমান মেয়র আলহাজ আব্দুল বাতেন, এইচ এম ফজলুর রহমান, অ্যাডভোকেট আসিফ শামস রঞ্জন, এস এম সাদিয়া আলম এবং আলহাজ্ব কে এম আব্দুল্লাহ।
তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া এস এম আসিফ শামস রঞ্জন শামসুল হক টুকুর ছেলে মো. আব্দুল বাতেন, তার আপন ভাই ও এস এম সাদিয়া আলম আপন ভাতিজি।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, দুপুরে নারিকেল গাছ প্রতীক পেয়েই বিকেলের দিকে বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী আব্দুল বাতেন তার সমর্থকদের নিয়ে বৃশালিখা মহল্লায় ভোট চাওয়ার নামে ভোটারদের মধ্যে নগদ টাকা ও শাড়ি বিতরণ করছিলেন। এ সময় মহল্লাবাসী এটাকে নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন জানিয়ে প্রতিবাদ করলে মেয়র প্রার্থী আব্দুল বাতেন ও তার সহযোগী আশরাফ প্রামানিক, আনোয়ার, জামরুল, শাহিন মোল্লা, মতিউর রহমান মজনু, মনিরুজ্জামান মনি, ফখরুল ইসলাম, হুমায়ন হিটু, ইয়ামিন, ফারুক, ইশা, সবুজ, বিল্লুু, রাসেলসহ ২০/২৫ জন লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহল্লাবাসীর ওপর হামলা করে এবং বেদম মারপিট করে।
এতে ফিরোজ, মুরাদ, ইব্রাহিম, পাপ্পু, ইমরানসহ নৌকা-বিদ্রোহী দুইপক্ষের ১০-১২ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে বাতেন ও তার বাহিনীর উপর চড়াও হলে আব্দুল বাতেন ও তার বাহিনী পালিয়ে যায় বলে জানান এলাকাবাসী। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে বাতেন বাহিনীর ভয়ে আতংক বিরাজ করছে। তাদের আশঙ্কা যে কোনো মহুর্তে আবারও বড় ধরণের আক্রমণ হতে পারে।
এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে পৌর এলাকার হাজারো আওয়ামী লীগ সমর্থক মাঠে নেমে বাতেনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিদ্রোহী স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আব্দুল বাতেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বেড়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, দুই প্রার্থীর বাড়ি একই মহল্লায়। শুক্রবার বিকেলে প্রতীক পাওয়ার পর নৌকা এবং নারিকেল গাছ মার্কার সমর্থকরা একই স্থানে জড়ো হওয়ায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয় ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
রাকিব হাসনাত/আরআই