না জানিয়ে খালার বাড়ি কিশোরী, হাজতে নির্দোষ জারিফুল

জারিফুল ইসলাম, লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা থানার আব্দুস সাত্তারের ছেলে তিনি। সাভার পৌর এলাকার শাহীবাগের আইচনোয়াদ্দা এলাকায় থেকে মুরগির ব্যবসা করতেন। কিন্তু হঠাৎ পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে পাঠিয়ে দেয় আদালতে। অভিযোগ, তিনি দুই কিশোরীকে অপহরণ করেছেন। কিন্তু দুই কিশোরী বাড়িতে না জানিয়ে বেড়াতে গিয়েছিল খালাবাড়ি।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানার কল্যাণপুরে খালার বাড়ি থেকে ওই দুই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সাভারের শাহীবাগের আইচনোয়াদ্দা এলাকা থেকে তারা নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক কিশোরীর মা নিপা আক্তার।
অভিযোগে বলা হয়, সাভারের ওই এলাকার বাসা থেকে ঘুরতে বের হয় মারিয়া সুলতানা ফিহা (১১) ওরফে মুক্তা ও বিথী আক্তার (১৪)। এ সময় প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে অপহরণ করেন জারিফুল। পরদিন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী মুক্তার মা নিপা আক্তার। অপর ভুক্তভোগী বিথী মুক্তাদের প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া।
অভিযোগের ভিত্তিতে গত রোববার (১৪ নভেম্বর) সাভারের শিমুলতলা এলাকা থেকে জারিফুল ইসলামকে (২৭) আটক করে পুলিশ। দুই কিশোরীর কোনো খোঁজ না মেলায় ১৫ নভেম্বর মামলা হয়। পরে আটক জারিফুলকে আদালতে পাঠিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে আনে সাভার থানা পুলিশ। রিমান্ড শেষে গত ১৮ নভেম্বর তাকে আবার আদালতে পাঠানো হলে খোঁজ মেলে দুই কিশোরীর। তারা নিজের ইচ্ছায় বীথির খালার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল বলে জানা যায়। কিন্তু নির্দোষ জারিফুল এখনো হাজতে।
মামলার বাদী নিপা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মেয়ের সন্ধান পেয়েছি। তাকে উদ্ধারও করেছে পুলিশ। তারা বিথীর খালার বাসায় নিজের ইচ্ছায় গিয়েছিল।
জারিফুলকে আসামি করলেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তো কিছুই জানি না। আমার মেয়ে বিথীর সাথে বাসা থেকে বের হয়েছে। যখন খুঁজে পাচ্ছিলাম না তখন বিথীর বোন বকুলের কাছে যাই। সে বলে জারিফুল তাদের অপহরণ করেছে। তাই থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম।
এ ঘটনার সাথে জারিফুল সম্পৃক্ত কি না জানতে চাইলে তিনি তার মেয়েকে জিজ্ঞেস করে বলেন, মেয়েরা নিজেরাই সেখানে গিয়েছিল। মামলা প্রত্যাহার করার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমার অভিভাবক রয়েছে, তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিথীর দুলাভাই সাইফুল ইসলাম জানান, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানার কল্যাণপুর এলাকায় বিথীর খালার বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার জানা যায় যে, বিথীরা খালার বাসায় গেছে। তারা নিজের ইচ্ছায় সেখানে গিয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সালাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই দুই শিশু-কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন একটা বিষয় নিয়ে খুব ব্যস্ত, এ বিষয়ে পরে কথা বলব।
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোমিনুল বলেন, আমরা ভিকটিমদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
মাহিদুল মাহিদ/এইচকে