শিক্ষার্থীকে জুতা কামড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে বললেন শিক্ষক

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চরফ্যাশন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে জুতা কামড় দিয়ে কান ধরে ওঠবস করিয়ে শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পলাশ চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে। গত ৮ নভেম্বর বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে শ্রেণিকক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ওই শিক্ষার্থীর বাবা এ ঘটনার বিচার দাবি করে গত রোববার (১৪ নভেম্বর) চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগটি তদন্তের জন্য সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
শনিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল নোমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ওই শিক্ষার্থীর বাবা অভিযোগ করেন, তার ছেলে চরফ্যাশন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। গত ৮ নভেম্বর সহপাঠীদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হলে সহপাঠীরা ক্লাস শিক্ষক পলাশ চন্দ্র দাসের কাছে অভিযোগ করে। শিক্ষক পলাশ চন্দ্র দাস তাকে শ্রেণিকক্ষে ডেকে নিয়ে শাস্তি হিসেবে কান ধরে ওঠবস করান এবং জুতা মুখে কামড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকার শাস্তির নির্দেশ দেন। শিক্ষকের ওই নির্দেশ পালনে দ্বিতীয় শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী রাজি না হলে শিক্ষক চাপ প্রয়োগ করে তাকে জুতা কামড় দিয়ে মুখে তুলে নিতে বাধ্য করেন।
ওই শিক্ষার্থীর বাবা বিষয়টি প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিনকে জানান এবং সুরাহার জন্য ৭ দিন অপেক্ষা করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন কোনো সুরাহা না করায় ঘটনার ৭ দিন পর গত ১৪ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক পলাশ চন্দ্র দাস জানান, দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে কথা কাটাকাটির বিষয়টি তাকে জানানোর পর তিনি বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। কান ধরে ওঠবস করানো কিংবা জুতা কামড়ে শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, দ্বিতীয় শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর
অভিভাবক বিষয়টি আমাকে ফোনে জানালে তাকে বিদ্যালয়ে আসতে বলেছি। কিন্তু তিনি আসেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল নোমান জানান, শিক্ষার্থীর অভিভাবকের দেয়া অভিযোগটি তদন্তের জন্য সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চরফ্যাশন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ইউএনও স্যার কর্তৃক আমাকে অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ইমতিয়াজুর রহমান/আরএআর