পরীক্ষার হলে মা, সন্তান ঘুমায় স্কাউট সদস্যের কোলে

মা পরীক্ষা দিচ্ছেন হলের ভেতরে। আর বাইরে শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা রোভার স্কাউটের দুই কর্মী দাঁড়িয়ে আছেন সেই মায়ের সন্তান কোলে নিয়ে। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পরপরই এমন দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে দুপুরে নরসিংদী সরকারি কলেজে ঘটনাটি ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেন নরসিংদী সরকারি কলেজ রোভারের সিনিয়র রোভার মেট সাইফুল ইসলাম সাদী।
বাচ্চা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা স্কাউট কর্মী দুজন রোভার স্কাউট নরসিংদী সরকারি কলেজ ইউনিটের মো. ইয়াসিন ও সুমাইয়া ইসলাম জ্যোতি। অন্যদিকে শিশুটির পরীক্ষার্থী মায়ের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনার্স প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা ছিল। এ সময় ছোট কোলের বাচ্চা নিয়েই পরীক্ষায় অংশ নিতে আসেন এক মা। শিশুটিকে এক বৃদ্ধার কাছে রেখে মা চলে যান ভেতরে পরীক্ষার হলে। মাকে না পেয়ে শিশুর কান্না কোনোভাবেই থামছিল না। বিষয়টি শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা রোভার স্কাউট নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখার কর্মীদের নজরে এলে দুজন কর্মী গিয়ে সহায়তা করেন এবং পরীক্ষা শেষ হওয়া অব্দি দুজন মিলে বাচ্চাটাকে কোলে করে রাখেন।

রোভার স্কাউট সদস্য মো. ইয়াসিন মিয়া বলেন, আমাদের গেটে ডিউটি ছিল সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। ডিউটি শেষ করে চলে আসব, তখন শিশুর কান্না দেখে আর আসিনি। আমি আর জ্যোতি মিলে শিশুটিকে শান্ত রাখার চেষ্টা করি এবং ঘুম পাড়াই। পরে দুপুর পর্যন্ত কোলে করে রাখি।
সুমাইয়া ইসলাম জ্যোতি বলেন, বাচ্চাটার সঙ্গে এক বৃদ্ধ নারী ছিলেন। তিনি বয়স্ক, তার ওপর বাচ্চাও কাঁদছিল। তখন মনে হলো তাকে একটু হেল্প করি। পরে আমি কোলে নিয়ে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করি। একপর্যায়ে আমি আর ইয়াসিন মিলে পুরো সময়টাই তাকে কোলে রাখি।
নরসিংদী সরকারি কলেজের ইসলামি শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক, নরসিংদী জেলা রোভার স্কাউটের সস্পাদক ও রোভার স্কাউট নরসিংদী সরকারি কলেজের ইউনিট লিডার আবুল খায়ের সরকার বলেন, শুধু এই পরীক্ষার সময় না। করোনার সময়ও লকডাউন বাস্তবায়নে স্কাউট সদস্যরা কাজ করেছে বেশ শৃঙ্খলার সঙ্গে। এ ছাড়া সামাজিক সচেতনতার বিষয়েও আমাদের টিম কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আজকের বিষয়টিও বেশ আনন্দদায়ক।
রাকিবুল ইসলাম/এনএ