বাবার মরদেহ বাড়িতে, সন্তান পরীক্ষার হলে
৩ নম্বর কক্ষে বসে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা দিচ্ছেন মেরাজ হক। এক হাতে চোখের পানি মুছে অন্য হাতে পরীক্ষার খাতায় লিখে চলেছেন। আবার ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠছেন মাঝেমধ্যে। তাকে সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছেন পাশের পরীক্ষার্থী সহপাঠীরা। পরীক্ষা শুরুর কিছু সময়ের মধ্যে তার বাবার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় পুরো কেন্দ্রে নেমে আসে শোকের ছায়া।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) উপজেলার সাইফুর রহমান সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এমন হৃদয়বিদারক মুহূর্তের সৃষ্টি হয়।
মেরাজ হকের (১৭) বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নে। তিনি ফুলবাড়ি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের সদ্য প্রয়াত শরিফুল হক মিল্টনের (৪৭) ছেলে। মেরাজ হক ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের বিএম শাখার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখেই তিনি পরীক্ষা দিতে যান।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মেরাজ হকের বাবা বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাত ৩টার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। রাত পোহালেই পরীক্ষা। একদিকে দুশ্চিন্তা, অন্যদিকে বাবাকে হারানো শোকে ভেঙে পড়েন মেরাজ হক। পরে স্বজনদের সান্ত্বনায় কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিতে আসেন মেরাজ। পরীক্ষা শেষে বেলা আড়াইটার দিকে তার বাবার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
সাইফুর রহমান সরকারি কলেজর অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রসচিব মো. রফিকুল ইসলাম জানান, পরীক্ষার্থী মেরাজ হকের বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে তাকে বিশেষ কোনো সুবিধা দেওয়া হয়নি। তবে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আমরা তাকে উৎসাহ দিয়েছি। সে সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে।
মো. জুয়েল রানা/এনএ
