পারলারে ছাত্রীর লাশ, ধর্ষণের পর হত্যা

খুলনার দৌলতপুরের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী অঙ্কিতা দে ছোঁয়াকে (৮) কম্বলের লোভ দেখিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। লাশ প্রথমে গ্যারেজে বস্তার পাশে ও পরে গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে বিউটি পারলারের বাথরুমে লুকিয়ে রাখা হয়।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বীনাপানি ভবনের মালিকের ছেলে প্রীতম রুদ্র (২৭)।
খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আহম্মেদ আসামির জবানবন্দী রেকর্ড করেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। আসামি প্রীতম রুদ্র দৌলতপুরের পাবলা বণিকপাড়া এলাকার প্রভাত কুমার রুদ্র’র ছেলে।
দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ২২ জানুয়ারি স্কুলছাত্রী অঙ্কিতাকে কম্বলের লোভ দেখিয়ে ভবনের ছাদে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে বাড়ির মালিকের ছেলে প্রীতম রুদ্র। অঙ্কিতাকে ছাদে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে সে চিৎকারের একপর্যায়ে তার মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করলে ৮ বছরের শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর ধর্ষণ শেষে নাইলনের রশি ও পরনের জুতার ফিতা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে প্রীতম রুদ্র।
ওসি হাসান আল মামুন আরও বলেন, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে প্রীতম জানায়, হত্যার পর বস্তায় ভরে অঙ্কিতার লাশ প্রথমে গ্যারাজে সিমেন্টের বস্তার পাশে ও পরবর্তীতে গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে বিউটি পারলারের বাথরুমে লুকিয়ে রাখা হয়। ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত নয় বলে সে স্বীকার করেছে।
তিনি বলেন, গত ২২ জানুয়ারি দুপুরে বনিকপাড়া মৌচাক টাওয়ারের সামনে থেকে স্কুলছাত্রী অঙ্কিতা নিখোঁজ হয়। এরপর তার বাবা পাবলা বনিকপাড়া এলাকার সুশান্ত দে দৌলতপুর থানায় নিখোঁজের বিষয়ে জিডি করেন। পরবর্তীতে ২৬ জানুয়ারি অপহরণ মামলা করা হয়।
২৮ জানুয়ারি স্কুলছাত্রী অঙ্কিতার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের পর প্রিতমসহ আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করে। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে প্রিতমকে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। হত্যার পর গুমের সঙ্গে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আটক অপর সাতজনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, স্কুলছাত্রী অঙ্কিতা দে ছোঁয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেল নগরীর দৌলতপুর এলাকায় খুলনা-যশোর মহাসড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়। মানববন্ধনে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ ধরনের ঘটনার মূল কারণ। তারা ন্যায়বিচারের স্বার্থে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
মোহাম্মদ মিলন/এমএসআর