স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল

আজ বাঙালি জাতির গৌরবের দিন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ৩০ লাখ শহিদের বিনিময়ে বিজয়ের স্বাদ পেয়েছে জাতি। তাই প্রতিবছর বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে নামে লাখো জনতার ঢল। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সৌধপ্রাঙ্গণ উম্মুক্ত করা হলে বাড়তে থাকে জনতার স্রোত।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক ব্যানার নিয়ে স্মৃতিসৌধে প্রবেশ করতে থাকে বিভিন্ন সামাজিক, সেচ্ছাসেবীসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ। একে একে শ্রদ্ধায় সিক্ত হতে থাকে এবং ফুলে ফুলে ভরে যায় শহিদবেদি।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বাংলা মায়ের দামাল ছেলেদের স্মৃতিস্তম্ভ জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসে এমন চিত্র দেখা যায়। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ, স্থানীয় ও দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা জনতার ঢল নামে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে।
স্থানীয় পোশাক শ্রমিক আউয়াল বলেন, আমরা দিনভর কারখনায় কাজের চাপে থাকি। বছরে দুই বার আমরা দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা বীর শহিদদের স্মরণ করার সুযোগ পাই। আজ তাই পুরো পরিবার নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। এখানে আসলেই গর্বে বুকটা ভরে যায়।
ফরিদপুর থেকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা রুবেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা যুদ্ধ করতে পারিনি। কিন্তু যারা যুদ্ধ করেছেন, দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন তাদের কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করা প্রয়োজন। তাই শ্রদ্ধা জানাতে ফরিদপুর থেকে এসেছি। এখানে আমি প্রতিবারই আসি। এবার সড়কে যানজট ছিল তাই আসতে খুব কষ্ট হয়েছে। তবে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রাণটা জুড়িয়ে গেছে।
শহিদবেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন শেরপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা সফের আলী। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ স্মৃতিসৌধে গণমানুষের ঢল নেমেছে। সবাই একে একে নিবেদন করছে শ্রদ্ধা। আমি আমার সহযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়েছি। স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়ে বেঁচে আছি। কিন্তু আমার সহযোদ্ধারা এই স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে জীবন দিয়েছেন। তারা দেখে যেতে পারেননি স্বাধীনতা। আজ তারা সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধায় সিক্ত। এটাও আমার কাছে বড় পাওয়া।
এর আগে বিজয়ের প্রথম প্রহরে শহিদবেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর সৌধ প্রাঙ্গন জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করা হয়। এর পরই সৌধ প্রাঙ্গণে নামে জনতার ঢল।
মাহিদুল মাহিদ/আরআই