স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ
চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউপিতে কেন্দ্র দখল করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর (মোটরসাইকেল) এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার আগেই নজরুল ইসলাম হাবু উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ ও নাজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে পাঁচ নারী ও তিন পুরুষ এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টরা বলেন, সকালে কেন্দ্রে প্রবেশ করার মুহূর্তে নৌকার ব্যাচ পরা কয়েকজন যুবক এসে মোটরসাইকেলের এজেন্ট জানার পর হাত থেকে কার্ড কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। নারীদের বুথে পুরুষরা এসে ভোট কেটে ব্যালট ভর্তি করে নিচ্ছে।
মোটরসাইকেল প্রতীকের নারী এজেন্ট নাসিমা, ফেরদৌসি বেগম, আফরোজা আক্তারসহ বেশ কয়েকজন এজেন্টের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আমরা এজেন্টের কার্ড নিয়ে ভোটকেন্দ্র প্রবেশ করার চেষ্টা করলে নৌকার লোকজন এসে কার্ড ছিঁড়ে ফেলে। তখন তারা বলে, মোটরসাইকেলের কোনো এজেন্ট এখানে থাকতে পারবে না। তখন আমরা প্রিসাইডিং অফিসারকে বিষয়টি জানালে তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বাধ্য হয়েই আমরা কেন্দ্রে বাইরে অবস্থান করছি।
তারা আরও বলেন, এখানে নারীদের বুথে পুরুষ ঢুকে নৌকার ভোট কেটে নিচ্ছে। সকালেই যদি ভোট কাটাকাটি শুরু হয় তাহলে ভোট সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কিত আমরা। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা থাকলেও সেই পরিবেশ এখানে নেই।
অপর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাউদ্দিন মালিথার (আনারস) সমর্থক শরিফুল ইসলাম বলেন, নজরুল ইসলাম হাবু উচ্চ বিদ্যালয় ও নাজিরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার লোকজন বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম জানান, সকালে নজরুল ইসলাম হাবু উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। বিষয়টি আমরা উচ্চ পর্যায়ে জানিয়েছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দিয়ে তারা নৌকার পক্ষে ভোট কেটে নিচ্ছে। আমার এজেন্টদের কেন্দ্রে গিয়ে বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে নৌকার লোকজন।
নজরুল ইসলাম হাবু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার মো. আজমল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখানে কোনো এজেন্টকে বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। যদি কাউকে বের করে দেওয়া হয় তাহলে আমার জানা নেই। ভোটকেন্দ্রের বাইরে কয়েকজন এজেন্ট দাঁড়িয়ে আছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তাদের যদি বের করে দেয় তাহলে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ (এসআই) কামরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখানে সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কেন্দ্র দখল করে ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ জাল ভোট দিলে তাকে আটক করা হবে।
পাবনা সদরের রিটার্নিং অফিসার ও সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার কায়ছার আহমেদ জানান, বিষয়টি শোনার পর আমরা সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়েছি। নজরুল ইসলাম হাবু উচ্চ বিদ্যালয় ও নাজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা এড়াতে আমিসহ আমার কর্মকর্তারা সেখানে যাচ্ছি। যদি কোনো প্রার্থীর এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয় তাহলে আমি নিজেই ব্যবস্থা নেব।
রাকিব হাসনাত/এসপি