টাঙ্গাইল-৭ উপনির্বাচনে নেই ভোটের আমেজ
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে উপনির্বাচনে সকাল থেকেই ভোটার উপস্থিতি তেমন লক্ষ করা যায়নি। অনেক কেন্দ্রের বাইরে চেয়ার-টেবিলে বসে ভোটারদের ভোট নম্বরে টোকেন দিতে দেখা যায়নি। এ ছাড়া নৌকার প্রার্থীর এজেন্ট ও নেতাকর্মীদের দেখা গেলেও নির্বাচনে অংশ নেওয়া জাপাসহ চার প্রার্থীর নেতাকর্মী ও এজেন্টদের দেখা যায়নি। ফলে কোনো উৎসবের আমেজ ছিল না টাঙ্গাইল-৭ আসনের সংসদ উপনির্বাচনে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মির্জাপুর পৌরসভার পুষ্টকামরী আলহাজ মো. শফিউদ্দিন মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। সকাল আটটা থেকে দুপুর দুই পর্যন্ত ৩ হাজার ১১৪ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় ৯০০ ভোটার ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিয়েছেন। তবে ওই কেন্দ্রে এক ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ২০টি।
আরও দেখা গেছে, পৌরসভার পুষ্টকামরী আলহাজ মো. শফিউদ্দিন মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভেতর নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যরা, নৌকা প্রার্থীর নেতাকর্মীরা এবং দু-একজন ভোটার ছাড়া তেমন কাউকে দেখা যায়নি। ভোট কক্ষগুলোর ভেতরেও নৌকার এজেন্ট ও কর্মীদের ছাড়া অন্য প্রার্থীর এজেন্ট বা লোকজনকে পাওয়া যায়নি।
তবে সেখানে ভোট দিতে আসা ভোটাররা অভিযোগ করেন, ভোটে ছাপ দেওয়ার আগেই ভেতর থেকে ভোট দিয়ে দিচ্ছে। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হয় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক সদস্য বলেন, সকালের দিকে এক যুবক ভোট দিতে কেন্দ্রে আসছিল। কিন্তু তার ভোটটি সে দিতে পারেননি। অন্য একজন ভোট দিয়ে দিয়েছে। ওই যুবক দলীয় লোকজনের সঙ্গে তর্কাতর্কি করেছিল।
নৌকা প্রার্থীর কর্মীরা জানান, এই কেন্দ্রের সব ভোটারের বাড়িতে ভোটের আগের দিন ভোটার নম্বরের স্লিপ দিয়ে আসা হয়েছে। যে কারণে বাইরে তেমন মানুষের সরগরম নেই। ফলে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে ভোটার নম্বর দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
এদিকে টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী জহিরুল হক জহির নির্বাচন চলাকালীন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ইভিএম মেশিনে ভোটারদের জোর করে নির্দিষ্ট মার্কায় টিপ (চাপ) দিতে বলা হচ্ছে। বেশ কিছু কেন্দ্রে তারা ভোট জোর করে নিচ্ছে। ১২১টি কেন্দ্রে লাঙ্গলের এজেন্ট দেওয়া হয়েছে। অনেক কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। আবার বেশ কিছু কেন্দ্রে এজেন্টদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাদের মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আমার দলের হাই কমান্ডকেও জানানো হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
সকাল থেকেই কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম রয়েছে। এ ছাড়া ভোটার নম্বর ছাড়া কাউকে ভোট দেওয়া হচ্ছে না। যদিও ইভিএমে আইডি কার্ডের নম্বর ওঠালেই ভোটারের ছবিসহ তথ্য আসে। তারপরও তারা ভোট দিতে পারছে না। বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
পৌরসভার পুষ্টকামরী আলহাজ মো. শফিউদ্দিন মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ১১৪। সকাল থেকেই ভোটার সংখ্যা কম ছিল। সংসদ নির্বাচনে ভোটের উৎসব নেই। কেন্দ্রের বাইরেও তেমন লোকজন নেই। দু-একজন করে ভোটার এসে তাদের ভোট দিয়েছে।
অভিজিৎ ঘোষ/এনএ