পাবনায় শিক্ষার্থীদের থেকে নেওয়া চাঁদা ফেরত দিল স্কুল কর্তৃপক্ষ
সংবাদ প্রকাশের পর করোনার টিকা প্রদানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিয়েছে পাবনার বেড়া উপজেলার ঢালারচর উচ্চবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে সব শিক্ষার্থীর টাকা মাইকিং করে ফেরত দেন শিক্ষকরা।
বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় প্রশাসনেও।
এ জন্য সোমবার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এলাকায় মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আদায় করা টাকা ফেরত দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বেড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খবির উদ্দিন, প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা।
অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ইসহাক হোসেন, নবম শ্রেণির ছাত্রী সুমি খাতুনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, টিকা প্রদানের নামে টাকা আদায় করা নিয়ে তারা বিড়ম্বনায় পড়েছিল। কোথাও তো টাকা নেওয়ার কথা শোনেনি তারা। সে কারণে বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছিল। টাকা ফেরত পাওয়ায় তারা এখন খুশি বলে জানায়।
ঢালারচর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কষ্ট লাঘবের কথা চিন্তা করে প্রত্যন্ত এলাকার বিদ্যালয়ের যোগাযোগব্যবস্থা দিকে নজর রেখে অনেকের সঙ্গে আলাপ করে টাকা আদায় করা হয়েছিল। বিষয়টির নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে তিনি ভাবেননি। তিনি সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুর আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিনি টাকা আদায়ের সত্যতা পেয়েছেন এবং জরুরিভাবে আজকের মধ্যেই টাকা শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে টাকা ফেরত দিয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিদ্যালয়ের এসি (এয়ারকন্ডিশনার) কেনার টাকা পরিশোধ করতে রোববার (১৬ জানুয়ারি) করোনার টিকা দিতে প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬০ থেকে ১০০ টাকা করে নেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। কয়েকজন শিক্ষার্থী বিষয়টির প্রতিবাদ করলে শিক্ষকরা ভয়ভীতিও দেখান তাদের। পরে বাধ্য হয়েই টাকা দিয়ে টিকা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোববার দুপুরে ঢালারচর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সাংবাদিকদের গতকাল জানিয়েছিলেন, টিকা কার্যক্রম পরিচালনায় এসি ক্রয় বাবদ ১ লাখ ১২ হাজার টাকা খরচ হবে। এর মধ্যে ২৫ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা দিয়ে পরিশোধ করা হবে।
এ নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‘এসি কিনতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিকা বাবদ চাঁদা আদায়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
রাকিব হাসনাত/এনএ
