ময়মনসিংহে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ, শনাক্ত ১৬১
ময়মনসিংহে প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ৫ দিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) সকালে জেলা সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব ও অ্যান্টিজেন টেস্টে ৫৮৭ নমুনা পরীক্ষা করে ১৬১ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৮৪৪ জনে। এরমধ্যে ২১ হাজার ৮৭৭ জন করোনামুক্ত হয়েছেন ও ২৯৮ জন মারা গেছেন।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. মহিউদ্দিন খান মুন জানান, ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে নতুন করে ১৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীর রয়েছেন ৭৫ জন। এরমধ্যে করোনাভাইরাস পজিটিভ রোগী ৪৯ জন। এছাড়াও বর্তমানে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পাঁচজন। আর ১৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
ওমিক্রন মোকাবিলায় সতর্কতা
ওমিক্রন মোকাবিলায় ময়মনসিংহ বিভাগজুড়ে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি বড় পরিসরে সভা-সমাবেশ বন্ধে দেওয়া হয়েছে নির্দেশনা। বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে অভিযান ও মাইকিং করে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন। এছাড়াও করোনার বাড়তি চাপ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজী বলেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন মোকাবিলায় মমেক হাসপাতালের ৪০০ শয্যা সক্ষমতার করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটটি পর্যায়ক্রমে ৪০০ শয্যাতেই উন্নীত করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া ১০ হাজার লিটারের অক্সিজেন প্ল্যান্টটি ২০ হাজার লিটারে উন্নীত করা হচ্ছে।
অক্সিজেনের পয়েন্ট ৬০০ বাড়িয়ে ১ হাজার ৬০০ করা হয়েছে জানিয়ে ওয়াজেউদ্দিন ফরাজী বলেন, নতুন করে অক্সিজেনের লাইন মোটা করা হয়েছে। মজুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত ওষুধ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মী।
এদিকে জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান বলেন, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে চার স্তরের নির্দেশনা রয়েছে। সে অনুযায়ী সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণের পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সতর্কও করা হচ্ছে। প্রয়োজন অনুযায়ী জেল-জরিমানাও করা হবে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শাহ আলম বলেন, করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জামালপুর সদর হাসপাতাল, শেরপুর সদর হাসপাতাল, নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল এবং মমেক হাসপাতালে ৪৬০টি শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক আরও বলেন, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০টি বেড প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া চলছে। ময়মনসিংহ বিভাগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩২ শতাংশ কোভিড হাসপাতালে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন মোকাবিলায় সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে মাস্ক পরায় বাধ্য করতে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
উবায়দুল হক/এমএসআর
