রংপুরজুড়ে শনাক্ত ১৬৫, একজনের মৃত্যু

রংপুর বিভাগে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ওঠা-নামা করছে। দিন দিন করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ভারতের কোলঘেঁষা এই বিভাগ। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগজুড়ে আরও ১৬৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে আক্রান্ত দিনাজপুর জেলার এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ৫৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম।
এর আগে গত আটদিনে বিভাগ জুড়ে (১৫-২২ জানুয়ারি) ৫৬৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এ সময়ে আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি।
বিভাগীয় পরিচালক জাকিরুল ইসলাম জানান, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের আট জেলার ৪৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের ৩৭, দিনাজপুরের ৩৪, রংপুরের ২২, গাইবান্ধার ২০, পঞ্চগড়ের ১৯, নীলফামারীর ১৯, কুড়িগ্রামের ৮ এবং লালমনিরহাট জেলার ৬ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন।
বর্তমানে বিভাগে করোনা আক্রান্ত ৩০ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সংকটাপন্ন ১২ রোগীকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। বাকিদের বাসায় রেখে চিকিৎসা চলছে।
একই সময়ে ভারত থেকে লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ৩৫ জন দেশে ফিরেছেন।
পরিচালক আরও জানান, রংপুর বিভাগে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুরে। এ জেলায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ১৫ হাজার ২৩২ এবং ৩৩৩ জন মারা গেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৭৩- তে।
এ ছাড়া জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৬৩ জন মারা গেছে গাইবান্ধায়। এ জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৯৪২ জনের। ঠাকুরগাঁওয়ে মৃত্যু ২৫৬ ও শনাক্ত ৭ হাজার ৭৯১, নীলফামারীতে মৃত্যু ৮৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৫৪৫, পঞ্চগড়ে মৃত্যু ৮১ ও শনাক্ত ৩ হাজার ৮৭৭, কুড়িগ্রামে মৃত্যু ৬৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৬৭৯ এবং লালমনিরহাট জেলায় মৃত্যু ৬৯ ও আক্রান্ত ২ হাজার ৭৯৮ জন।
তিনি জানান, ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ৩ লাখ ১২ হাজার ৬৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৬ হাজার ৪৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আট জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৫৩ জনের। এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৫৪ হাজার ৬৩৭ জন।
এদিকে, অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বা রেড জোনে থাকা রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট জেলায় সংক্রমণে শনাক্তের হার ১০-১৫ শতাংশে ওঠা-নামা করছে। এ ছাড়া ইয়েলো জোন বা মধ্যম ঝুঁকিতে থাকা রংপুর, কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁও জেলায় শনাক্তের হার ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, গণটিকাসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে টিকার আওতায় আনার ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমে আসছে। তবে বর্তমানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এবং করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতিতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক।
একই সঙ্গে শীতকালে করোনার সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সঙ্গে সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান জানান তিনি।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই