নবজাতকের কপাল কেটে ফেলার ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের মামলা

ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লায় অবস্থিত আল মদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অস্ত্রোপচারকালে নবজাতকের কপাল কেটে ফেলার সেই ঘটনায় এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের মামলা করা হয়েছে। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুরের যুগ্ম জেলা জজ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
এ মামলার বাদীরা হচ্ছেন রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দক্ষিণ উজানচর মৈজুদ্দিন মণ্ডলপাড়া গ্রামের মো. শফি খান, তার স্ত্রী রূপা আক্তার এবং নবজাতিকা মুসকান বিনতে শফি (নাবালিকা)।
এ মামলায় মূল বিবাদী করা হয়েছে ছয়জনকে। এরা হলেন- আল মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকারিয়া মোল্লা পলাশ, ব্যবস্থাপক মো. আল হেলাল মোল্লা টগর ও মো. গোলাম কিবরিয়া, চেয়ারম্যান রহিমা রহমান এবং হাসপাতালের দুই কর্মচারী চায়না আক্তার ও মো. আরিফুজ্জামান সবুজ।
এ ছাড়া মোকাবিলা বিবাদী করা হয়েছে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ও ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে। সব মিলিয়ে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে মোট আটজনকে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী মানিক মজুমদার বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন দিয়েছেন এবং মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন আগামী ৩ মার্চ। ওই মামলায় বাদীগণের অনুকূলে বিবাদীগণের প্রতিকূলে এক কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য চাওয়া হয়।
এজাহারে বলা হয়, ওই হাসপাতালে সন্তানের স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। কিন্তু প্রসবকালীন সময়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত কোনো চিকিৎসক ছিলেন না, এ ছাড়া কোনো প্রশিক্ষিত ও দক্ষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞও ছিলেন না। প্রসবের সময় ধারল অস্ত্রের আঘাতে নবজাতকের কপালের বাম পাশে তিন ইঞ্চি পরিমাণ ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং প্রসূতির শরীরে জখম হয়, আজীবন ওই ক্ষত তাদের বহন করতে হবে।
অভিযোগে বিবাদীদের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে প্রতারণা, অপ চিকিৎসা এবং মোকাবিলা বিবাদীদের (সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক) বিরুদ্ধে কর্তব্য এবং দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া বিবাদীদের বিরুদ্ধে নিজ দায়িত্ব ও এখতিয়ার বহির্ভূত পদক্ষেপ গ্রহণ করায় বাদীদের এ যাবৎ কালে চিকিৎসা ব্যয়ে খরচ হওয়া দুই লাখ টাকাসহ আরও ব্যয়ভার বহন করার দাবি জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ জানুয়ারি শহরের আল মদীনা প্রাইভেট হাসপাতালে প্রসূতির অস্ত্রোপচারের সময় নবজাতকের কপাল কাটার ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি শহরে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। এর আগে ওই নবজাতকের বাবা বাদী হয়ে গত ১৬ জানুয়ারি ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান রহিমা রহমান, তার দুই ছেলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকারিয়া মোল্লা পলাশ ও মো. আল হেলাল মোল্লা টগর এবং ওই হাসপাতালের আয়া চায়না বেগমকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে প্রতারণার অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানানো হয়।
এ ব্যাপারে ওই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া মোল্লার বোন আসমা বেগম জানান, ক্ষতিপূরণের মামলার ব্যাপারে তিনি বা তার পরিবার কিছু জানে না। জানার পর এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে পারবেন।
জহির হোসেন/আরআই