ছুটির দিনে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকের ঢল

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ঢল নেমেছে। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পরিবার এবং স্বজনদের নিয়ে পর্যটকরা ছুটছেন সেন্ট মার্টিনে। প্রতিদিন প্রায় ৭-৮ হাজার পর্যটক দ্বীপের বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
রাত্রিকালীন সমুদ্রের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভোরের নির্মল হাওয়া উপভোগ, দ্বীপের নীল জলরাশি, শৈবাল-প্রবাল এবং জীবন্ত কোরাল দেখতে হাজারো পর্যটক এখন সেন্ট মার্টিনে অবস্থান করছেন। দ্বীপের শতাধিক আবাসিক হোটেল এবং কটেজ পর্যটকে ঠাসা।
হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির ছুটি উপভোগ করতে আগে থেকে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা সেন্ট মার্টিনের হোটেল এবং কটেজ বুকিং দিয়ে রেখেছেন। হোটেল-কটেজ পরিপূর্ণ হওয়ায় আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াড়িতেও রাত কাটাচ্ছেন।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আকতার কামাল জানান, প্রতিবছর কয়েক হাজার পর্যটক ২১ ফেব্রুয়ারি সেন্ট মার্টিনে ছুটে আসেন। নৌ ভ্রমণ এবং দ্বীপে রাত যাপনের মজাই আলাদা। বিশেষ দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে পর্যটকরাও কাছের মানুষদের নিয়ে প্রবাল দ্বীপে এসে থাকেন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও পর্যটকদের বাড়তি চাপ লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার, কেয়ারি সিন্দাবাদ, কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন, গ্রিন লাইন, এমভি ফারহান, পারিজাত, আটলান্টিকসহ স্পিড বোটে করে পর্যটকরা সেন্ট মার্টিনে এসেছেন। এদের অনেকে দিনে এসে দিনে সেন্ট মার্টিন ছেড়ে যাচ্ছেন। বেশির ভাগ পর্যটক প্রবাল দ্বীপে অবস্থান করছেন। অনেক পর্যটক প্রবাল দ্বীপে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন।

রাজশাহী থেকে আগত এক পর্যটক বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে রাতযাপন করার শখ ছিল দীর্ঘ দিনের। সাপ্তাহিক ছুটির দিন পরিবার নিয়ে প্রবাল দ্বীপে ছুটে এসেছি।
সেন্ট মার্টিন হোটেল-কটেজ মালিক সমিতি সভাপতি মো. মুজিবুর রহমান জানান, ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা প্রতি বছর সেন্ট মার্টিনে আসেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। দ্বীপের হোটেল-কটেজ মালিক সমিতি সব সময়ই পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে বদ্ধপরিকর।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, ৭ হাজারেরও বেশি পর্যটক দ্বীপে এসেছেন। ছুটির দিন স্মৃতিময় করতে এসব পর্যটক প্রবাল দ্বীপে অবস্থান করছেন। অনেক পর্যটক হোটেল-কটেজে জায়গা না পেয়ে ইতোমধ্যে তাঁবু ভাড়া নিয়েছেন। তারা নিকটজনদের নিয়ে সৈকতের বালিয়াড়িতে রাত কাটাবেন।
টেকনাফ ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে প্রতিদিন পুলিশ কাজ করছে। বিশেষ দিন পর্যটকরা যেন উদযাপন করতে পারেন সেজন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত আছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী জানান, সেন্ট মার্টিনে পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে অবস্থান করতে পারেন, সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দ্বীপে অবস্থানকারী পর্যটকদের সুবিধার্থে প্রশাসনের বাড়তি নজরদারির পাশাপাশি সেখানকার জনপ্রতিনিধিদেরও সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া আছে।
সাইদুল ফরহাদ/আরএআর