এবার ব্যবসা না হলে চাকরিটাই থাকত না

করোনায় কারণে গেল দুবছর ঈদে ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা ছিল। এবার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। আগের চেয়ে বেশি বিকিকিনি হয়েছে। ঈদের আগে রাজধানীর ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় মার্কেট কিংবা শপিংমলে ছিল ক্রেতাদের ভিড়।
গেল দুই বছরে ঝিমিয়ে পড়া ঈদকেন্দ্রিক বাণিজ্য ফের চিরচেনা রূপ পেয়েছে। এতে কিছুটা চাঙ্গা হয়েছে দেশের অর্থনীতি। সোমবার ঈদের আগের দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মার্কেট, শপিংমল ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত চারটি ঈদে ছিল করোনার প্রকোপ। ছিল বিধিনিষেধ। অনেকেই শপিংয়ে আসেননি। তাই ব্যবসায় ছিল মন্দা। তবে এবার বেচাকেনা হয়েছে ভালো । ভালো বেচাকেনা হলেও করোনার আগের মতো হয়নি। মানুষের আর্থিক অবস্থাও আগের মতো নেই। এবার যা ব্যবসা হয়েছে তাতেই খুশি বিক্রেতারা।
ফার্মগেট সুপার মার্কেটের নিউ অনন্যা শাড়ির দোকানি সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, করোনার কারণে দুই বছর আমরা ব্যবসা করতে পারিনি- এটা সবাই জানে। এ বছর পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। দুই বছরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে একটু কষ্ট হবে। আরও দু-তিন বছর তো লাগবেই।
একই মার্কেটের ব্যবসায়ী শিরিন আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদ গিরে বেচাকেনা মোটামুটি ভালো হচ্ছে। আমরা পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস ও বাচ্চাদের কাপড় বিক্রি করছি। এর মধ্যে পাঞ্জাবি বিক্রি বেশি হয়েছে। পহেলা বৈশাখের আগে থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত ক্রেতাদের চাপ ছিল। বিক্রিও হয়েছে। গতকাল ও আজ তেমন বিক্রি নেই।
মহামারির দুই বছর পর সার্বিকভাবে প্রত্যাশা অনুযায়ী কেমন বিক্রি হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যাশা তো বেশিই থাকে যা বিক্রি হয়েছে, বলতে গেলে ভালোই।
তরুণ ব্যবসায়ী জুবায়ের হোসেন নামের অপর এক বিক্রেতা বলেন, এবার বিক্রি ভাল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় আমরা খুশি। গত দুই বছরের আর্থিক ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া যাচ্ছে।
তিনি জানান, রমজানের শুরু থেকেই বিক্রি বেড়েছে। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ ক্রেতা কম। কারণ অনেকেই গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। রাতে কিছুটা ভিড় থাকবে। এবার ঈদে পাঞ্জাবি থ্রি-পিস বেশি বিক্রি হয়েছে বলে তিনি জানান।
দুই বছরের তুলনায় এবার ব্যবসা ভালো হলেও করোনা আসার আগে যে পরিমাণ ব্যবসা হতো, তা হয়নি বলছেন ফুটপাতের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন। তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। মানুষের আর্থিক অবস্থাও তেমন ভালো নয়। এরপরও যে পরিমাণ ব্যবসা হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ আমি তাতে খুশি।
মালিবাগের আয়েশা শপিংয়ের মাতৃভূমি পাঞ্জাবির দোকানের মালিক ইকবাল হোসেন বলেন, দুই বছর আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসা ছিল না কিন্তু ঠিকই দোকান ভাড়া, খরচ ও কর্মচারীর বেতন দিতে হয়েছে। এবার বিক্রি হয়েছে মোটামুটি। তবে যেমনটা প্রত্যাশা করেছিলাম তা হয়নি।
বোলিং ব্র্যান্ডের জুতার শোরুমের দায়িত্বরত কর্মী আশরাফ বলেন, টানা দু্ই বছর বসা ছিলাম। এবার ব্যবসা না হলে চাকরিই থাকত না। এবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক, ব্যবসা ভালোই হয়েছে।
এসআই/আরএইচ