করোনা মোকাবিলায় এবার থোক বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ জুন ২০২২, ০৩:৩৬ পিএম


করোনা মোকাবিলায় এবার থোক বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা

করোনা মোকাবিলায় যেকোনো জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরের মতো এই বছরও প্রস্তাবিত বাজেটে পৃথক থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হলেও ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাখা হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, ২০২০ সালের প্রথমার্ধ থেকে এখন পর্যন্ত ‘কোভিড-১৯’ অতিমারির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ের প্রকোপে সারা বিশ্ব সংকটাপন্ন সময় অতিক্রম করছে ও ২০২২ এর প্রথমার্ধে এসেও বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিরাজ করছে। বাংলাদেশ এ অতিমারি থেকে জীবন-জীবিকা সুরক্ষাকল্পে স্বাস্থ্যখাত শক্তিশালীকরণসহ সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যখাতের যেকোনো জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য বিগত দুই বাজেটেই আমরা ১০ হাজার কোটি টাকা করে থোক বরাদ্দ রেখেছিলাম। যদিও দেশে করোনা সংক্রমণ বর্তমানে অনেকটাই স্তিমিত হয়ে এসেছে, কিন্তু এর সম্ভাব্য পুনরাবির্ভাবের আশঙ্কা এখনও রয়ে গেছে, কারণ বিশ্বের অনেক দেশেই এখনও এ অতিমারির প্রকোপ বিরাজমান। সুতরাং কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও তজ্জনিত কারণে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সংঘটিত ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে আগামী অর্থবছরেও স্বাস্থ্যখাতের জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

মুস্তফা কামাল আরও বলেন, কোভিড-১৯ এর মতো জটিল অতিমারি মোকাবিলা, দ্রুত সাড়া দেওয়া ও নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক, কারিগরি দিক ও দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে। বিগত দুটি বাজেটেই কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বিপুল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার কথা বলা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। 

আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

টিআই/জেডএস

টাইমলাইন

Link copied