এখন থেকে কাগজবিহীন বাণিজ্য চুক্তি করবে বাংলাদেশ

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০২:৩৯ পিএম


এখন থেকে কাগজবিহীন বাণিজ্য চুক্তি করবে বাংলাদেশ

আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে এখন থেকে কাগজবিহীন বাণিজ্য (ডিজিটাল ট্রেড) চুক্তি করবে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত তথ্য ও দলিলাদি ইলেকট্রনিক মাধ্যমে আদান-প্রদান হবে। ফলে বাণিজ্যে ঝামেলা কমার পাশাপাশি সময় ও ব্যয় কমে যাবে।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কাগজবিহীন ইলেকট্রনিক মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত তথ্য ও দলিলাদি আদান-প্রদান সহজ করার লক্ষ্যে সম্পাদিত ‘দ্য ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট অন ফ্যাসিলিটেশন অব ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ চুক্তি ২০ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) থেকে কার্যকর হয়েছে।  

সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এর আগে ২০১৬ সালে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউনেসক্যাপ) সদস্য দেশগুলো ‘দ্য ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট অন ফ্যাসিলিটেশন অব ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শীর্ষক চুক্তিটি গ্রহণ করে। কাগজবিহীন ইলেকট্রনিক মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত ডাটা ও ডকুমেন্ট আদান-প্রদান সহজীকরণের লক্ষ্যে এ চুক্তি করা হয়।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ২৫টি দেশের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য ব্যবস্থা ত্বরান্বিতকরণে এ চুক্তি হাতে নেওয়া হয়। বর্তমানে সংস্থাটির ৫৩টি সদস্য দেশ এ চুক্তিতে অংশ নিতে পারবে। আজারবাইজান, বাংলাদেশ, চীন, ইরান, ফিলিপাইন এরইমধ্যে চুক্তি কার্যকর করার ক্ষেত্রে অনুসমর্থন করে এটির পক্ষে মত দিয়েছে। এছাড়া আর্মেনিয়া ও কম্বোডিয়া চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এসক্যাপভুক্ত অন্যান্য দেশ চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।  

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, কোভিড ১৯ এর ফলে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার (আমদানি-রপ্তানি) ক্ষেত্রে সৃষ্ট জটিলতা দূরীকরণে পেপারলেস ট্রেড/ডিজিটাল ট্রেড পদ্ধতি ইতোমধ্যেই সমাদৃত হয়েছে। কোভিডোত্তর সময়ে কাগজবিহীন ইলেকট্রনিক মাধ্যম বাণিজ্য সহজীকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এ ব্যবস্থা দেশের বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধি, ই-কমার্স ও ডিজিটাল অর্থনীতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

চুক্তিটি বাস্তবায়নের ফলে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সম্পাদনের সময় ও ব্যয় হ্রাস পাবে। ইউনেসক্যাপ-এর প্রকাশনা থেকে জানা যায়, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্ট ও ইউনেসক্যাপ এর ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড সমন্বিতভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাণিজ্য বাবদ খরচ ৩৩ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ। ৩৩ শতাংশের বার্ষিক আর্থিক মূল্য দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
উন্নয়নশীল দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের ফলে সম্ভাব্য বাণিজ্য সংকোচন মোকাবিলায় বাংলাদেশ এ চুক্তির আওতায় কারিগরি সহযোগিতা পেতে পারে। চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের সহজে ব্যবসা করার সূচকে (ইজ অব ডুয়িং বিজনেস) বাংলাদেশের অবস্থান এগিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশ অধিকতর বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে।

এছাড়াও সরকারের ওয়ান স্টপ সার্ভিস ও ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো  বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় হবে। এতে প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন ও ভিশন ২০৪১ অনুযায়ী উচ্চ আয়ের দেশ (উন্নত বাংলাদেশ) গঠনের স্বপ্ন ত্বরান্বিত হবে।

ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সহজ ও নমনীয়। ডিজিটালাইজেশনের যে কোনো পর্যায়ে উন্নত ও উন্নয়নশীল নির্বিশেষে এসক্যাপভুক্ত যে কোনো দেশ এ চুক্তিতে যোগ দিতে পারবে। এটি কার্যকর হলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (টিএফএ বা বাণিজ্য সহজীকরণ চুক্তি) এবং ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো পদ্ধতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তা সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশসমূহ ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেডে যোগ দিয়ে বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়াতে পারবে। একইসঙ্গে চুক্তির বাস্তবায়ন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে ই-কমার্স ও ডিজিটাল ইকোনমির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করবে।

এসআই/আরএইচ

Link copied