ভারতের ত্রিপুরা ও মণিপুরে জ্বালানি সরবরাহে সাময়িক ট্রানজিট

ভারতের ত্রিপুরা ও মণিপুর রাজ্যে জরুরি জ্বালানি চাহিদা পূরণের জন্য শর্তসাপেক্ষে দেশটিকে সাময়িক ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের আংশিক সড়ক ব্যবহার করে জ্বালানি তেল ও এলপিজি পরিবহন করবে ভারত।
২৪ আগস্ট এনবিআরের কাস্টমস বিভাগের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও চুক্তি বিভাগের দ্বিতীয় সচিব মো. তারেক মাহমুদের সই করা আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সোমবার (২৯ আগস্ট) এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এনবিআরের আদেশে বলা হয়েছে, ভারতের অনুরোধে গৌহাটি থেকে ত্রিপুরা ও মণিপুর রাজ্যে জরুরি জ্বালানি চাহিদা পূরণের জন্য সাময়িকভাবে বাংলাদেশের আংশিক সড়ক ব্যবহার করে জ্বালানি তেল ও এলপিজি পরিবহনের জন্য ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে ডিপার্টমেন্ট ও ভারতের ইন্ডিয়ান ওয়েল করপোরেশন লিমিটেডের মধ্যে মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের (এমওইউ) আওতায় সাময়িকভাবে ট্রানজিট পণ্য চালানের চুক্তি সই হয়। চুক্তির আওতায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ডাউকি (মেঘালয়), তামাবিল (বাংলাদেশ) সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ, ভায়া সিলেট বাইপাস-রাজনগর-মৌলভীবাজার/ব্রাহ্মণবাজার শমশেরনগর চাতলাপুর (বাংলাদেশ) ও কাইলাশহর (ত্রিপুরা) রুটে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে জ্বালানি সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে ইন্ডিয়ান ওয়েল করপোরেশন লিমিটেডের পেট্রোলিয়াম পণ্য বহনের জন্য সাময়িক ট্রানজিট পরিচালনা ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সাময়িক ট্রানজিটের ক্ষেত্রে শর্তসমূহ
নির্ধারিত রুটে কেবল দিনের বেলায় ট্রানজিট হবে।
ট্রানজিট কেবল ইন্ডিয়ান ওয়েল করপোরেশন লিমিটেডের পেট্রোলিয়াম পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে গমনের সময় ট্রানজিট যানবাহনসমূহ সর্বদাই সিলড অবস্থায় থাকবে।
গমনকালে বহনরত পেট্রোলিয়াম পণ্যের কোনো বাণিজ্যিক হস্তান্তর করা যাবে না
পেট্রোলিয়ামবাহী দশটি যানবাহন একত্রে একটি কনভয় হিসেবে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যাবে এবং প্রতিদিন উভয়পথে সর্বোচ্চ (৪০ + ৪০) ৮০টি যানবাহনের রুট পারমিট থাকবে।
বৈধ ভিসাসহ পাসপোর্ট, বৈধ অনুমোদিত রুট পারমিট, বৈধ ফিটনেস সার্টিফিকেট, বৈধ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স, বৈধ ইনস্যুরেন্স পলিসি ও সহকারীর বৈধ সার্টিফিকেট যানবাহনে থাকতে হবে।
ইন্ডিয়ান ওয়েল করপোরেশন লিমিটেড চালক, সহকারী ও যানবাহনের তালিকা দেবে।
চালক ও সহকারীর বাংলাদেশে অবস্থানকালে বিদ্যমান আইন-কানুন মেনে চলতে হবে।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে চলাচলকারী ট্রানজিট যানবাহনের সর্বোচ্চ এক্সেল লোড হবে ১০টন।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে চলাচলকারী ট্রানজিট যানবাহনে পর্যাপ্ত সংখ্যক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা এবং অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ব্যবহারের জন্য চালক ও সহকারীর পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে গমনকালে ট্রানজিট যানবাহন জরুরি ক্ষেত্র ব্যতীত কেবল নির্ধারিত স্থানেই বিশ্রাম অথবা জ্বালানি নেওয়ার জন্য থামতে পারবে।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ইন্ডিয়ান ওয়েল করপোরেশন লিমিটেডের যানবাহন গমনাগমনের বিষয়টি বন্যা বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে রাস্তায় যানবাহনের উপযোগিতার ওপর নির্ভর করবে।
ট্রানজিট ফি
১৯৬৯ সালের কাস্টমস অ্যাক্ট ও ২০২১ সালের কাস্টমস ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট বিধিমালা অনুসারে সাময়িক ট্রানজিট পরিচালনার ফি ও চার্জ নির্ধারিত হবে। ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি চালানপ্রতি ৩০ টাকা, সিকিউরিটি চার্জ টনপ্রতি ১০০ টাকা, এসকর্ট চার্জ প্রতি টন ৫০ টাকা, বিবিধ প্রশাসনিক চার্জ প্রতি টন ১০০ টাকা, প্রতি কন্টেইনার স্ক্যানিং ফি ২৫৪ টাকা এবং ইলেকট্রিক লক অ্যান্ড সিল ফি সংশ্লিষ্ট বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত।
আরএম/আরএইচ