নীতি সহায়তা দিয়েও এসএমই উঠছে না, ভবিষ্যৎ খুবই অন্ধকার
নীতি সহায়তা পেয়েও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প (এসএমই) উঠছে না, ভবিষ্যৎ খুবই অন্ধকার বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসএমই নিয়ে এমন হতাশার কথা জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
সভায় এসএমই ফাউন্ডেশন, গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি, পিডব্লিউসি, এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস লিমিটেড, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ তাদের বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সালাহউদ্দিন মাহমুদ ব্যক্তি পর্যায়ের পুরুষ এসএমইদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকা এবং মহিলা এসএমইদের জন্য ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ের এসএমইদের করযোগ্য আয়ের ওপর কর রেয়াত ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন।
এছাড়া সরকারি সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সীমা ৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন। রপ্তানির বিপরীতে প্রাপ্ত ক্যাশ ইনসেন্টিভের ওপর উৎসে কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের প্রস্তাব শুনে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এসএমইকে উঠাতে পারছি না। আমি নিজে দেখছি এসএমই’র ভবিষ্যৎ খুবই অন্ধকার। এসএমই এর জায়গাটা বিগ প্লেয়াররা নিয়ে ফেলেছে। কীভাবে এটাকে ঠিক করা যায়। কোন দিক আমি সামাল দেব।
উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় বড় প্রতিষ্ঠান এসএমইতে ভালো করছে জানিয়ে মুনিম বলেন, একটা যুক্তি হচ্ছে ইউনিট কষ্ট ও প্রোডাকশন কষ্ট কম হচ্ছে। কোয়ালিটি অনেক হাই হচ্ছে। রপ্তানি হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে এই পণ্য ভালো করছে। এটাকে স্বীকার করতে হয়। অন্যদিকে এসএমই বলছে তারা এমন কোয়ালিটি প্রোডাক্ট তৈরি করতেও পারছে না। তারপরেও বিভিন্ন কোয়ালিটি প্রোডাক্ট তৈরি করে বিভিন্ন দেশে এসএমই টিকে আছে, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ তৈরি করছে। কিন্তু দেশে এসএমই সেভাবে আগাচ্ছে না।
তিনি বলেন, এটা নিয়ে ভালো করে কাজ করা দরকার। সমস্যা কোথায়? কোথায় কাজ করতে হবে, এটা নিয়ে আরও গভীরে দেখা দরকার। কেনো এসএমই ফ্লারিশ করছে না। এনবিআরের পক্ষ থেকে নানা কিছু করে দিলাম তারপরেও কেনো ভালো করছে না সেটা দেখা দরকার।
স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় তামাকজাত ও চিনিযুক্ত বেভারেজ পণ্যের ওপর কর বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ। অন্যদিকে অর্থনীতি সমিতি রাজস্ব আয়ের ২৭টি উৎসের কথা জানায়। যার মধ্যে রয়েছে বিদেশি পরামর্শক ফি, বিউটি পার্লার, রয়্যালটি বা সম্পদ থেকে রাজস্ব। এছাড়া সংস্থাটি কালো টাকা ও পাচার হওয়া টাকা উদ্ধারে এনবিআরকে জোর দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
অন্যদিকে এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস লিমিটেড এলটিইউতে ভ্যাট ও ট্যাক্স একত্রীকরণ, রিটার্ন দাখিল বৃদ্ধিতে সচেতনতা সৃষ্টি, বিভিন্ন খাতে কর অব্যাহতির প্রভাব মূল্যায়ন, রিসাইকেলড ফাইবার শিল্পে কর অব্যাহতির প্রস্তাব দিয়েছে।
আরএম/জেডএস