নতুন কর আরোপ না করে ফাঁকির পথ বন্ধ করুন

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

০৯ মে ২০২১, ০২:২২ পিএম


নতুন কর আরোপ না করে ফাঁকির পথ বন্ধ করুন

২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে নতুন কোনো কর আরোপ বা কর হার বৃদ্ধি না করে প্রশাসনিক দক্ষতায় কর ফাঁকিবাজদের কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ বন্ধ করার আহ্বান জানালেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কনভেনার ও  বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

রোববার (৯মে) নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘জাতীয় বাজেট ২০২১-২২: পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কী থাকছে’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানও এতে বক্তব্য রাখেন। 

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য তার প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলেন, গত অর্থবছর আমরা এক অদ্ভূত সময়ের মধ্যে পার করেছি। ওই বছর কর আদায়ের হার ও সরকারের ব্যয় কমেছিল। চলতি অর্থবছরেও কর আদায় ও সরকারি ব্যয়ের হার প্রয়োজনের তুলনায় কমেছে। কর আদায় যেখানে হওয়া উচিত ছিল ১০ থেকে ১২ শতাংশ হারে, সেখানে প্রথম ৯ মাসে ৭ শতাংশের কিছু বেশি কর আদায় হয়েছে। সরকারি ব্যয় বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নিম্ন হারে রয়েছে। যেখানে বাড়ার কথা, সেখানে গত বছরের তুলনায় ৪.৩০ শতাংশ কমেছে। 

তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক বেশি ইতোমধ্যে নিয়ে ফেলেছি। বাজেটে ব্যাংক খাত থেকে যেখানে ঋণ নেওয়ার কথা ৪৫ শতাংশের নিচে, সেখানে ইতোমধ্যে ব্যাংক থেকে ২৮৬.৪৩ শতাংশ ঋণ নিচ্ছি। অর্থ্যাৎ অন্য ঘটতিগুলো ব্যাংকের টাকা নিয়ে পূরণ করছি। একইভাবে ব্যাংক বহির্ভূত উৎস থেকেও ইতোমধ্যে ২৫২ শতাংশ ঋণ নেওয়া হয়ে গেছে। তাহলে আমরা তিন-চার রকমের সমস্যার মধ্যে আছি। কর আদায় বাড়ছে না, সরকারি ব্যয় বাড়ছে না। বাজেট ঘাটতি পূরণে সহজ মাধ্যম বৈদেশিক সাহায্য থেকে না নিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নিচ্ছি।  

আগামী বাজেটে নতুন কর আরোপ না করে কর ফাঁকি বন্ধে প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় বলেন, আগামী বাজেটে নতুন কোনো কর কিংবা কর হার বৃদ্ধি করা উচিত হবে না। প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করে করের আওতা বাড়ানো ও কর ফাঁকি কমিয়ে আনতে হবে। যারা কর দেয় না, তাদের কাছ থেকে কর আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যবসায়ীক গোষ্ঠীর সুবিধায় বিভিন্ন রেয়াতি সুবিধা রয়েছে; যা এখন বাদ দিতে হবে। আবার অভ্যন্তরীণ বাজারে শ্রমঘন শিল্পের ক্ষেত্রে কর হার নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রাখা জরুরি।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে যুক্তিহীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনৈতিকবাবে যুক্তিহীন, নৈতিকভাবে গর্হিত এবং রাজনৈতিকভাবেও অপকারী হচ্ছে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত না আনা কিংবা তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে না আনা। এসব সুযোগ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। একদিকে দরিদ্রের জন্য ব্যয় বৃদ্ধি করতে পারব না, অন্যদিকে অবৈধ অর্থকে বৈধ করার সুবিধা স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আদৌ গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করি। আর যারা নিয়মিত কর দেয় তাদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিকভাবে হয়রানিসহ ইত্যাদি কাজ যেন বন্ধ করা হয়।

আরএম/এনএফ

Link copied