অর্থনীতি সমিতির ১৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

০১ জুন ২০২১, ০৯:৫১ পিএম


অর্থনীতি সমিতির ১৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব

চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ২০২১-২২ সালের উন্নয়ন ও পরিচালনের জন্য ১৭ লাখ ৩৮ হাজার ৭১৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।

বাজেটে রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য নতুন ২৮টি উপায় দেখানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ জুন) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিকল্প বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আগামী বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের খসড়া বাজেট প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর ঠিক দুদিন আগে এই বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরা হলো।

অর্থনীতি সমিতির বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়, করোনা মোকাবিলা ও আর্থ-সামাজিক মন্দা থেকে উত্তরণে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সরকারের আয় বাড়াতে হবে। সম্ভাব্য কোন উপায়ে তা বাড়তে পারে, তা নিয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি ২৮টি নতুন উৎসের কথা বলছে।

২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মোট রাজস্ব ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরে এ আয় ৩ দশমিক ৩ গুণ বাড়িয়ে ১৭ লাখ ৩৮ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা প্রস্তাব করেছে  বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। সুযোগ থাকার পরও সরকার নজর না দেওয়া তিনটি খাত—অতিরিক্ত মুনাফা, কালো টাকা ও অর্থ পাচার থেকে সমিতি সবচেয়ে বেশি আয় (৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা) দেখিয়েছে।

অর্থনীতি সমিতির ব্যয় প্রস্তাব
 
শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ২ লাখ ২ হাজার ১২৪ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১২৪ কোটি টাকা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে ৩ লাখ ৩০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পরিচালন বরাদ্দ দিয়ে ‘গণপরিবহণ এবং গবেষণা ও বিচ্ছুরণ’ নামে দুটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছে অর্থনীতি সমিতি।

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ২ লাখ ২৬ হাজার ১১৪ কোটি টাকা, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

অধ্যাপক বারকাত বলেন, আমাদের প্রস্তাবনায় বাজেটের ব্যয় বরাদ্দ কাঠামোতে গুণগত রূপান্তর ঘটবে। উন্নয়ন বাজেট হবে পরিচালন বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি, যা এখন ঠিক উল্টো। এখন উন্নয়ন-পরিচালন বাজেট বরাদ্দের অনুপাত ৩৮:৬২, যা আমাদের প্রস্তাবিত বাজেটে হবে ৬৯:৩১।

চলতি অর্থবছরে সরকারের মোট আয় (প্রাপ্তি) ছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। পক্ষান্তরে বিকল্প বাজেটে এই প্রাপ্তি প্রস্তাব করা হয়েছে ১৬ লাখ ৩ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। রাজস্ব আয়ে প্রত্যক্ষ কর অনুপাত ৪৮:৫২ শতাংশের বিপরীতে সমিতির বাজেটে তা ৮৪:১৬ শতাংশ।

সমিতির বাজেটে নতুন খাত-উপখাত সংযোজন করা হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো— দুটি মন্ত্রণালয় গণপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং গবেষণা ও বিচ্ছুরণ মন্ত্রণালয়। ১০টি নতুন বিভাগের অন্যতম হলো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা বিভাগ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রবীণ হিতৈষী বিভাগ, দরিদ্র-বিত্তহীন-নিম্নবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের জীবন কুশলতা উন্নয়ন বিভাগ, গ্রামীণ নারী-দরিদ্র- বিত্তহীন-নিন্মবিত্ত-নিন্মমধ্যবিত্ত নারীপ্রধান খানার (পরিবার) জীবন কুশলতা উন্নয়ন বিভাগ।

অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা ২০১৫ সাল থেকে এই বিকল্প বাজেট দিয়ে আসছি, এটা আমাদের সপ্তম বাজেট। আশা করি, সরকার আমাদের এ বাজেট প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখবে।

এমআই/আরএইচ

Link copied