বেক্সিমকো-আইওএফের বিরুদ্ধে কোটি টাকার তহবিল আত্মসাতের অভিযোগ

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান এবং তাদের সংগঠন আইওএফের (আইওএফ) বিরুদ্ধে কোটি টাকার তহবিল আত্মসাত, লাইসেন্স শর্ত ভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগ এনেছে।
সে অনুযায়ী কমিশন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ (সংশোধনী ২০১০) এর ধারা ৭৩, ৭৪, ৭৬ এবং দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৪২০ ও ৪০৬ ধারায় নিয়মিত মামলা করার সুপারিশও করেছে।
সম্প্রতি ঢাকা পোস্টের হাতে আসা বিটিআরসির নিরীক্ষা ও তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে আইওএফ ও এর নির্বাহী কমিটির সদস্যরা কমিশনের কাছে বাধ্যতামূলক আর্থিক প্রতিবেদন জমা করেননি।
আরও পড়ুন
তাছাড়া, অনুমোদিত চুক্তি ও লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে টেলিকম মার্কেট ডেভেলপমেন্ট (এমডিএপ) তহবিল থেকে সংগ্রহ করা অর্থ বেক্সিমকো কম্পিউটারস লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবে জমা করেছেন।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমডিএস অ্যাকাউন্টের ব্যাংক বিবরণী বিশ্লেষণে মোট জমা হয়েছে ৬৩১ কোটি টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ৬২৫ কোটি টাকা। এর প্রায় ৯৫ শতাংশ অর্থ একক একটি ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছে, যার নাম বেক্সিমকো কম্পিউটারস লিমিটেড।
কমিশনের মতে, এভাবে তহবিল স্থানান্তর টেলিযোগাযোগ আইন, লাইসেন্স ও চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন এবং আস্থা ভঙ্গের শামিল।
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪৬ (১)(ঘ) ধারা অনুযায়ী আর্থিক আয় গোপন করার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় কমিশন লাইসেন্স স্থগিত, বাতিল বা জরিমানার ক্ষমতা রাখে। ইতোমধ্যে কমিশনের নিযুক্ত পরিদর্শন টিম তদন্ত শেষ করে মামলার সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তদন্ত প্রতিবেদনে আইওএফ (আইওএফ) এবং এসটি বেক্সিমকো কম্পিউটারস লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার ও কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- আইওএফের সভাপতি আসিফ রব্বানী, সহ-সভাপতি আবদুস সালাম, সদস্য মো. জয়নাল আবেদীন, সদস্য হাফিজুর রহমান, সদস্য খালিদ ইসলাম, সদস্য আবু তোহা মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, সদস্য এ কে এম শামসুদ্দোহা, সদস্য গাজী মো. সালাউদ্দিন, সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আব্দুল হান্নান (অব.), সদস্য নজরুল ইসলাম, সদস্য মোঃ হাসিবুর রশিদ, সদস্য হুমায়ুন কবির, সদস্য নাদির শাহ কুরেশি এবং সিসিও মুসফিক মঞ্জুর।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরা সবাই পরস্পর যোগসাজশে কমিশনের কাছে বাধ্যতামূলক প্রতিবেদন গোপন, লাইসেন্স ও চুক্তির শর্ত ভঙ্গ এবং এমডিএফ তহবিলের অর্থ বেক্সিমকো কম্পিউটারস লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে আত্মসাতের মাধ্যমে আইন লঙ্ঘন করেছেন।
আরএইচটি/এমএসএ