আরও ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রেমিট্যান্স-রপ্তানি ইতিবাচক থাকায় বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরাসরি ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ৩৮ মিলিয়ন (৩ কোটি ৮০ লাখ) মার্কিন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মাল্টিপল প্রাইস অকশন (এমপিএ) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এ ক্রয়ে ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট ছিল প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৮০ পয়সা। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ২১২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার ( ২.১২ বিলিয়ন ডলার) কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এক দিকে ডলারের জোগান বেড়েছে অন্যদিকে চাহিদা কমে আসায় দাম কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতায় ছিল। এ অবস্থায় ডলারের দাম কমে গেলে রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স পাঠানো ব্যক্তিরা নিরুৎসাহী হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ডলারের দর একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নামতে না দেওয়ার লক্ষ্যেই বাজারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে বাজার থেকে ডলার কিনে এবং কখনো বিক্রি করে দর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও পূর্বে বড় পরিমাণ ডলার বিক্রি করা হয়েছিল, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে রিজার্ভে চাপ কমাতে ধাপে ধাপে ডলার কেনার পথে হাঁটছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেনাকাটার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কিছুটা শক্তিশালী হবে বলে আশা করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে চালু হওয়া মার্কেটপ্রাইস অ্যাপ্রোচ ( এমপিএ) পদ্ধতিতে ডলার কেনা-বেচার ফলে একটি স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক দাম নির্ধারণ সম্ভব হচ্ছে, যা ব্যাংকগুলোর জন্যও ইতিবাচক। তবে তারা মনে করছেন, ডলার বাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আনতে আমদানি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ আরো বাড়ানো দরকার।
এছাড়া রিজার্ভের ওপর চাপ এবং বৈদেশিক লেনদেন ঘাটতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিটি পদক্ষেপ এখন বাজারে বড় প্রভাব ফেলছে। তাই এমন সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে বলছেন বিশ্লেষকেরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ ৯ অক্টোবরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ এখন ৩১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম–৬ অনুযায়ী রিজার্ভ আছে ২৭ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৭৫৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের (৭.৫৮ বিলিয়ন) সমপরিমাণ বৈদেশিক অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৯২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। রেমিট্যান্স আহরণের এ পরিমাণ আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ বেশি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬৫৪ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার।
এসআই/বিআরইউ