২৩৩ প্রতিষ্ঠানের ১৬৭৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

০৮ আগস্ট ২০২১, ০৩:৫৭ পিএম


২৩৩ প্রতিষ্ঠানের ১৬৭৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি

২৩৩ প্রতিষ্ঠানে অডিট ও অভিযান চালিয়ে এক হাজার ৬৭৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। বিদায়ী ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ভ্যাট গোয়েন্দার কার্যক্রম মূল্যায়নে এ চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪১টি প্রতিষ্ঠানে অডিট করে ও ৯২টি প্রতিষ্ঠানে সরাসরি অভিযান চালিয়ে ওই ফাঁকির বিষয়টি উদঘাটন করা হয়। 

রোববার (৮ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন শুরুর মধ্যেই করোনার বিস্তারের কারণে বড় ধরনের অভিযানে নামেনি ভ্যাট গোয়েন্দা। পরবর্তীতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ধীরে ধীরে চালু হওয়ায় এনবিআরের নির্দেশে ভ্যাট ফাঁকি রোধে মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করে ভ্যাট গোয়েন্দা। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণও মিলেছে। ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর ২৩৩টি তদন্তে এক হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে। জরিমানা হিসেবে আদায় হয়েছে ১৪৩ কোটি টাকা।

ভ্যাট গোয়েন্দা জানায়, গত অর্থবছরে রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান করাসহ নিয়মিত অডিটের মাধ্যমে প্রায় বিপুল পরিমাণ ফাঁকি উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর। এ তালিকায় ব্যাংক, বিমা, অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। বিশেষ অডিট ও অনুসন্ধান কার্যক্রমের মাধ্যমে সর্বমোট ১৪১টি প্রতিষ্ঠানের অডিট কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় এক হাজার ৪০৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটিত হয়েছে। 

অডিটে সর্বোচ্চ রাজস্ব উদঘাটিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৪৬২ কোটি ২৮ লাখ, প্রিমিয়ার ব্যাংক ১৪৫ কোটি ১৬ লাখ, ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক ১২৫ কোটি ৭৩ লাখ, বেসিক ব্যাংক ১০০ কোটি ৫১ লাখ, জনতা ব্যাংক ৪৯ কোটি ৫২ লাখ, আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ৪৮ কোটি ৮৪ লাখ, সোনালী ব্যাংক ৪৪ কোটি ২৭ লাখ, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ২৬ কোটি ৩৭ লাখ, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২৫ কোটি ২৮ লাখ, ডিপিএসএসটিএস স্কুল ২৩ কোটি ৩ লাখ, কারিশমা সার্ভিসেস ২০ কোটি ৯৭ লাখ, লংকা বাংলা ফাইন্যান্স ২০ কোটি ৬০ লাখ, এলিট পেইন্ট অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডা. ২১ কোটি ২০ লাখ টাকাসহ তালিকায় রয়েছে অনেক নামি-দামি প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া গোয়েন্দা দল সরেজমিনে প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও দলিলাদি জব্দ করার মাধ্যমে প্রায় ১৩৪ কোটি ৬ লাখ টাকা উদঘাটিত হয়েছে। অভিযানে সর্বোচ্চ রাজস্ব উদঘাটিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে আকতার ফার্নিচার ৩৯ কোটি ৬৩ লাখ, মোহাম্মদী ট্রেডিং ৩৮ কোটি ৯৯ লাখ, চারুতা প্রাইভেট লিমিটেড ৩০ কোটি ৩৬ লাখ, উজালা পেইন্টস ২৭ কোটি ১৪ লাখ, হোটেল লেকশোর সার্ভিস ১৬ কোটি ৯৮ লাখ, ফুড ভিলেজ প্লাস ১৩ কোটি ৫২ লাখ, ফুড ভিলেজ লিমিটেড ১২ কোটি ৯৩ লাখ, ডিবিএল সিরামিক্স ৬ কোটি ৮৯ লাখ, খান কিচেন ৩ কোটি ৬০ লাখ, সুং ফুড গার্ডেন ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকাসহ তালিকায় রয়েছে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান।

এ উদঘাটন ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৫ গুণ বেশি এবং তাৎক্ষণিক আদায় প্রায় আড়াই গুণ বেশি। ওই অর্থবছরে ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন হয়েছিল ৩১৯ কোটি টাকা।

আরএম/ওএফ

Link copied