অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতেই বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করেছেন

বাংলাদেশের স্বাধিকার অর্জন ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে মুক্তি অর্জন করার জন্য বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রাম করেছেন। ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে স্বাধীন বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এই বাংলাদেশ কখনো শেষ হওয়ার নয়। মুজিব মানেই বাংলাদেশ। তাই বঙ্গবন্ধুর চাওয়া এদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আমরা কাজ করলেই তার আত্মা শান্তি পাবে।
রোবাবর (১৫ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
গভর্নর ফজলে কবিরসহ আলোচনা সভায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, এ কে এম সাজেদুর রহমান খান এবং আবু ফরাহ মো. নাছের প্রমুখ।
গভর্নর ফজলে কবির বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রধানত দেশের স্বাধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। আমরা তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধ পরিকর। দেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল ও উন্নয়নশীল দেশের সব শর্ত পূরণের একেবারে দ্বারপ্রান্তে।
ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল বলেন, হেনরী কিসিঞ্জার বলেছিল- বাংলাদেশ একদিন ভাগাড়ে পরিণত হবে, কিন্তু এই বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতি, উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা সৌভাগ্যবান যে এই উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত হতে পেরেছি। সবাই যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করলে অবশ্যই আমরা বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফসল পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিয়ে যাব।
ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, জাতির পিতার নিজের ও পরিবারের ১৬জন সদস্যের রক্তের বিনিময়ে রক্ষা করেছেন এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নের জন্য আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাব। এদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আমাদের কর্ম-অবদানে অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর আত্মা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে।
ডেপুটি গভর্নর এ কে এম. সাজেদুর রহমান খান বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির সবচেয়ে শোকাবহ দিন। এদিন বাংলাদেশ হারিয়েছে জাতির পিতাকে। এমনকি শিশু সন্তান শেখ রাসেলকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর সব চিহ্ন চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল ঘাতকেরা। কিন্তু বাংলাদেশ ও বিশ্বের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু চিরদিন অমর হয়ে থাকবেন।
আলোচনা সভায় ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, আজ থেকে ৪৬ বছর আগে যে বিপথগামী ও বিশ্বাস ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে স্বাধীন বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এই বাংলাদেশ কখনো শেষ হওয়ার নয়। মুজিব মানেই বাংলাদেশ।
মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মো. নেছার আহাম্মদ ভূঁঞা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধিকার অর্জন ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে মুক্তি অর্জন করার জন্য বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তিনি এদেশের মাটি ও মানুষকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন বলেই বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সদস্যদের আত্মাহুতি দিতে হয়েছে। শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ তার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিরন্তরভাবে কাজ করে চলেছেন বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন গভর্নর ফজলে কবির। করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কর্মসূচি পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক, মহাব্যবস্থাপকরা ও সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ব্যাংকের সব সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বরে স্থাপিত জাতির পিতার আবক্ষ ভাস্কর্যে গভর্নর ও ডিপুটি গভর্নররা পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল, সিবিএসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় সংক্ষিপ্ত আকারে ১৫ আগস্ট সব শাহাদাত বরণকারীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে ‘মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটি’ কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, ব্যাংক চত্বরে বিশেষ আলোচনা সভা, ব্যাংকের কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল এবং গরিবদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়।
এসআই/এসএম