অবচয়ের হার নিয়ে বিকেএমইএর অসন্তোষ, ৩৫ শতাংশ রাখার দাবি

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২০ ডিসেম্বর ২০২১, ০২:৪৪ পিএম


অবচয়ের হার নিয়ে বিকেএমইএর অসন্তোষ, ৩৫ শতাংশ রাখার দাবি

পোশাক খাতে আমদানি পণ্যের সর্বোচ্চ অবচয় হার ৩০ শতাংশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার মেনুফেকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) আবেদন ছিল ন্যূনতম অবচয়ের হার ৪০ শতাংশ করা।

সরকারে এ সিদ্ধান্ত বাস্তব সম্মত নয় অ্যাখ্যায়িত করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার বুঝতে পেরেছে পোশাক খাতের সর্বোচ্চ অবচয় হার ১৬ শতাংশের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। মাঠ পর্যায়ের প্রয়োজনটি তারা গিয়ে দেখে গেছেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বাস্তবতার চিন্তা না করে নিজেদের মতো করে অবচয়ের হার নির্ধারণ করেছেন, যা পালন করা আমাদের জন্য অসম্ভব।

বিকেএমইএর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রায় দুই যুগ পর সরকার রোববার (১৯ ডিসেম্বর) পোশাক উৎপাদনের অবচয়ের হার ১৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি অনুবিভাগের এক আদেশে এ নীতি পরিবর্তন করা হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, বেসিক কাপড়ে সর্বোচ্চ অবচয় ধরা হবে ২৭ শতাংশ, বিশেষ কাপড়ে ৩০ শতাংশ এবং সোয়েটার ও মোজার ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ অবচয় ধরা হবে। অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর হবে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় শর্ত-নির্দেশনা জারি করতে পারবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। অবচয় সুবিধার আওতায় একজন আমদানিকারক আমদানি পণ্যের শুল্কায়নের ক্ষেত্রে ছাড় পেয়ে থাকেন।

এ বিষেয়ে বিকেএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুতা থেকে পোশাক উৎপাদন পর্যায়ে সর্বনিম্ন ৩৮ থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ শতাংশ অবচয় হয়। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সর্বনিন্ম ৪ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অসম্ভব। সেক্ষেত্রে বর্তমান প্রযোজ্য অবচয়ের হার বিবেচনা করে সুতা থেকে পোশাকের উৎপাদন পর্যায়ে সর্বমোট ৩৫ শতাংশ অবচয় হার পুনর্নির্ধারণ করার দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সরকার বেসিক কাপড়ে সর্বোচ্চ অবচয়ের হার ২৭ শতাংশের নির্ধারণ করেছে। আমরা ২৭ শতাংশের পরিবর্তে ৩০ শতাংশ এবং বিশেষ কাপড়ে ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ৩৫ শতাংশ করার দাবি জানাচ্ছি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘নিট গার্মেন্টে সুতা থেকে কাপড় তৈরি এবং কাপড় থেকে পোশাক তৈরিতে অবচয় হার পুনর্নির্ধারণ’ শীর্ষক এ আদেশে বলা হয়, নিট গার্মেন্টে সুতা থেকে কাপড় তৈরি এবং কাপড় থেকে পোশাক তৈরিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর জারি করা অবচয় হার বাতিল করা হয়েছে।

এর পরিবর্তে বেসিক নিট বা টিশার্ট, পোলো শার্ট, ট্রাউজার, শর্টস, স্কার্টস, পায়জামা ও এ ধরনের পণ্যে সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ অবচয়ন ধরা হয়েছে। এক্ষেত্রে নিটিংয়ের জন্য ১ শতাংশ, ডায়িং অ্যান্ড ফিনিশিংয়ের জন্য ৯ শতাংশ, কাটিংয়ের জন্য ১৩ শতাংশ, প্রিন্টিং-এমব্রয়ডারির মতো ভ্যালু এডিশনে ১ শতাংশ, সেলাই বাবদ ১ শতাংশ, ওয়াশিংয়ে ১ শতাংশ এবং সর্বশেষ ফিনিশিং ও ইনস্পেকশনে ১ শতাংশ অবচয় ধরা হয়েছে।

আদেশে বলা হয়েছে, রম্পার্স, টেঙ্ক টপস, গাউন, ‍হুডি, লিঞ্জারস এবং এ ধরনের অন্যান্য স্পেশাল আইটেমের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অবচয়ন ধরা হয়েছে।

এক্ষেত্রে কাটিংয়ে ২ শতাংশ, ডায়িং ও ফিনিশিংয়ে ৯ শতাংশ, কাটিং ১৫ শতাংশ, ভ্যালু এডিশন ১ শতাংশ, সুইয়িং ১ শতাংশ, ওয়াশিং ১ শতাংশ, ফিনিমিং অ্যান্ড ইনস্পেকশন ১ শতাংশ অবচয় সুবিধা পাওয়া যাবে। অপরদিকে সোয়েটার ও মোজার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ অবচয়ন ধরা হয়েছে।

এমআই/এসএসএইচ

Link copied