রপ্তানি আয় কমছেই

মহামারির ধাক্কায় গতি হারিয়েছে দেশের রপ্তানি আয়। সদ্য সমাপ্ত জানুয়ারিতেও রপ্তানি আয় কমার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও ব্যর্থ হয়েছে সরকার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের (জুলাই-জানুয়ারি) সাত মাস শেষে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার ২৬৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ০৯ শতাংশ কম। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (জুলাই-অক্টোবরে) রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৩৪৭ কোটি ডলার। বিপরীতে আয় হয়েছে ২ হাজার ২৬৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রথম সাত মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। একইসঙ্গে অর্জিত রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ে চেয়ে ১ দশমিক ০৯ শতাংশ কমেছে। আগের বছরের একই সময় রপ্তানি আয় হয়েছিল ২ হাজার ২৯১ কোটি ৯৫ লাখ ডলার।
দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। করোনার কারণে গত বছরের মার্চ থেকে এ খাতের রপ্তানি কমতে শুরু করে; এপ্রিলে পোশাক রপ্তানিতে ভয়াবহ ধস নামে। মে মাসেও তা অব্যাহত থাকে। তবে জুন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও জুলাই, আগস্টের মতো সেপ্টেম্বরেও ব্যাহত ছিল। অক্টোবরের শেষে এ খাতের আয়ে হোঁচট খায়। এরপর থেকে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
ইপিবির তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে এক হাজার ৮৪০ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ এবং আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতের আয়ের অংক ছিল এক হাজার ৯০৬ কোটি ৩২ লাখ ডলার।

মহামারির সংকটের মধ্যেও পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ শতাংশ। জুলাই-জানুয়ারি সাত মাসে ৭৬ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি।
আলোচিত সময়ে কৃষিপণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬১ কোটি ডলার; এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৫৯ কোটি ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ কম। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে ২ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে এ খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৬০ কোটি ডলার।

সুখবর নেই রপ্তানির অন্যতম অংশীদার চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে। আলোচিত সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৫২ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে ৫ দশমকি ৭৮ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৫৫ কোটি ডলার।
এদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় ২৫ দশমিক ২৮ শতাংশ কম হয়। প্রবৃদ্ধি কমে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৪৮ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ বিলিয়ন ডলার কম।
এসআই/জেডএস