ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে ঢিলেঢালায় চলছে ব্যাংক
সবসময় রমজান মাস ২৯ দিন হিসেব করে ঈদুল ফিতরের ছুটি নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এবার করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতিতে মানুষকে কর্মস্থলে রাখতে বৃহস্পতিবার (১৩ মে) থেকে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তাই আজ বুধবারও (১২ মে) দেশের সব ব্যাংক খোলা রয়েছে। লেনদেন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলছে। তবে শেষ কর্মদিবসে অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে চলছে ব্যাংকিং কার্যক্রম। লেনদেনেরও নেই চাপ। ছুটির আমেজে চলছে ব্যাংক।
সকালে রাজধানীর মতিঝিল ও দিলকুশা, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলাসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যাংকের শাখাগুলো ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
ব্যাংকের শাখাগুলোতে সকাল থেকেই ক্যাশ ও জমা কাউন্টারে কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। গত দুই তিন কার্যদিবসের মতো ভিড় নেই। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ব্যাংকেও আসেননি। গ্রাহকের চাপ কম থাকায় ব্যাংক কর্মকর্তারাও কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন।
বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের মতিঝিল শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে জানান, গত দুই তিন দিন গ্রাহকের অনেক চাপ ছিল। সবাই প্রয়োজনীয় লেনদেন সেরে ফেলেছে। কারখানা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও গতকাল টাকা তুলেছে। তাই আজ গ্রাহকের তেমন চাপ নেই। তবে আজ চাঁদ না উঠলে আমাদের আগামীকালও ব্যাংক খোলা রাখতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পোশাক শিল্পে কর্মীদের বেতন-বোনাস ও অন্যান্য ভাতা পরিশোধের সুবিধার্থে এবং রফতানি বাণিজ্য অব্যাহত রাখার বিষয়ে যে নির্দেশনা দিয়েছে তার আওতায় আমাদের শাখাও পড়ে। কারণ আমাদের শাখায় পোশাক শিল্প কারখানার অনেক লেনদেন হয়। পাশাপাশি রফতানি কার্যক্রমও চলে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
নবাবপুর শাখার এনসিসি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, আজকে সকাল থেকেই গ্রাহকের ভিড় কম। স্বাভাবিক দিনের মতো লেনদেন চলছে।
দিলকুশা শাখার এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. হারুন-আর-রশিদ ঢাকা পোস্টকে জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে গ্রাহকের ব্যাপক চাপ ছিল, সেবা দিতে কর্মীদের হিমশিম খেতে হয়েছে। সেই তুলনায় আজকে ভিড় নেই বললেই চলে। লেনদেন যা করার দরকার ছিল গ্রাহক গতকালের মধ্যে সেরে ফেলেছে। আজকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ আসছে না। এ কারণে ক্যাশ কাউন্টারগুলোতে চাপও কম।
এনসিসি ব্যাংকের শাখায় ক্যাশ কাউন্টারের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আশরাফ বলেন, আমার একটা ডিপোজিটের টাকা জমা দেওয়া লাস্ট ডেট ১০ তারিখ ছিল। গতকাল এসে ভিড় দেখে চলে গিয়েছিলাম। আজকে ভিড় কম তাই জমা দিয়ে দিলাম।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চলমান বিধিনিষেধ ৬ মে থেকে ১৬ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এসময় ব্যাংকও সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ব্যাংকের লেনদেন হচ্ছে। লেনদেন-পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার থেকে ঈদের তিন দিনের ছুটি শুরু হবে। তবে বুধবার শাওয়াল মাসের চাঁদ যদি না ওঠে তাহলে বৃহস্পতিবারও পোশাক শিল্প এলাকায় ব্যাংক খোলা থাকবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্রাহকের সুবিধার্থে ব্যাংক খোলা রয়েছে। আগের নির্দেশনাই বহাল আছে। সেই অনুযায়ী আজ যদি চাঁদ না ওঠে তাহলে রোজা ৩০টা হবে। আগের নির্দেশনা অনুযায়ী সার্কুলারে উল্লেখিত পোশাক শিল্প এলাকায় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা বৃহস্পতিবার খোলা থাকবে। পোশাক শ্রমিকদের ঈদের আগে বেতন ভাতা নিশ্চিত করতেই এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এসআই/জেডএস