ব্যাংকের পর্ষ‌দে এক পরিবারের একাধিক সদস্যের তথ্য জানা‌তে নি‌র্দেশ

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০:১৬ এএম


ব্যাংকের পর্ষ‌দে এক পরিবারের একাধিক সদস্যের তথ্য জানা‌তে নি‌র্দেশ

ব্যাং‌কের চেয়ারম্যান, এমডি ও পরিচালক হিসেবে কে কতদিন আ‌ছেন; এখন থে‌কে এ তথ্য প্রতিবছর বাংলা‌দেশ ব্যাং‌কে জানা‌তে হ‌বে। একই স‌ঙ্গে পরিচালনা পর্ষদে এক পরিবারের একাধিক সদস্য থাকলে তা‌দের সম্পর্ক ও তা‌দের কী প‌রিমাণ শেয়ার ধারণ করা আ‌ছে তার তথ্যও দিতে হবে।

গত ২৪ ফেব্রুয়া‌রি কেন্দ্রীয় ব্যাং‌কের ‌‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ’  এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।

ব্যাংক কোম্পানি আইনের সর্বশেষ ২০১৮ সালের সংশোধনী অনুযায়ী, পরিচালক পদে একজনের টানা নয় বছর থাকার সুযোগ রয়েছে। এ সংশোধনীর আগে থেকে যারা পরিচালক আছেন, তারাও নতুন করে ৯ বছর সময় পাচ্ছেন। দীর্ঘ দিন ধরে অনেকে একই ব্যাংকে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। কিংবা ঘুরে-ফিরে একই পরিবার থেকে বারবার চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে বেনামি শেয়ার ধারণের ঘটনাও ঘটছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরিচালক পদে কে কতদিন আছেন, বর্তমান শেয়ারহোল্ডারদের নাম-ঠিকানা, কে কত শতাংশ শেয়ার ধারণ করে আছেন, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে যারা আছেন তাদের নাম-ঠিকানা ও শেয়ার ধারণের পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে। পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী, অডিট ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটিতে যারা দায়িত্ব পালন করছেন তাদের যোগ্যতা, শেয়ার ধারণের পরিমাণ এবং একই পদে কতদিন আছেন, সে তথ্য দিতে হবে।

প্রতিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের আগামী সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নির্দেশনার বিষয়টি জানাতে এমডিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানসহ সব সদস্য, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাড়াও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট বা মহাব্যবস্থাপক সমপর্যায়ের কর্মকর্তা কোন পদে কতদিন আছেন, ব্যাংকিং খাতে কর্মকাল এবং বর্তমান দায়িত্ব বিষয়ে জানাতে হবে। আবার ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি বিভাগীয় প্রধানের (আন্তর্জাতিক, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, ট্রেজারি, ঋণ, মানবসম্পদ ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা) তথ্য দিতে হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতিটি ব্যাংকের ঋণ, আমানত, ঝুঁকি বহন ক্ষমতা, ব্যবসায় পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে একটি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা জমা দিতে হবে। প্রতিবছর ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সব তথ্য পাঠাতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগে। এ বছরের তথ্যসহ পরিকল্পনা জমা দিতে হবে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে। বাংলাদেশ ব্যাংকে এসব তথ্য পাঠানোর আগে প্রতিবছর নিতে হবে নিজ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন।

এতে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংকের ব্যবসায়িক মডেলের একটি বিশ্লেষণ জমা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কর্পোরেট, রিটেইল ও বাণিজ্যিক খাতে কী পরিমাণ ঋণ রয়েছে, শেয়ার বাজারসহ অন্য কোথায় কী পরিমাণ বিনিয়োগ রয়েছে, বিল-বন্ডে কী পরিমাণ বিনিয়োগ রয়েছে, সে তথ্য দিতে হবে। একইভাবে আমানতের বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে মেয়াদি, চলতি ও স্পেশাল নোটিশ আমানতের বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। 

এছাড়াও নতুন বছরে ব্যবসায়িক কৌশল কী হবে সে তথ্য দিতে হবে। সেখানে খাতভিত্তিক ঋণের পরিকল্পনা, তারল্য ব্যবস্থাপনা, মূলধন বাড়ানোর কৌশল, সম্পদের প্রবৃদ্ধি, মুনাফার কৌশল জানাতে হবে। একই সঙ্গে ঝুঁকি বহন ক্ষমতা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ আমানত তুলে নিলে পরিকল্পনা কী হবে; খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশ বাড়লে; আয় ২৫ শতাংশ কমলে; সুদহার ৩ শতাংশ ওঠা-নামা করলে ব্যাংক সেটি কীভাবে সমাধান করবে, সে বিষয়ে প্রতিবছর একটি পরিকল্পনা দিতে হবে। এসব ক্ষেত্রে ঘাটতি হলে জনগণের আস্থা ধরে রাখতে কী উদ্যোগ নেওয়া হবে, তা থাকতে হবে পরিকল্পনায়।

এসআই/ওএফ

Link copied