চার কোম্পানিতে নতুন পর্ষদ

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:৩৯ এএম


চার কোম্পানিতে নতুন পর্ষদ

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ভবন

উৎপাদন বন্ধ থাকার পাশাপাশি ঋণ খেলাপি এবং বিভিন্ন কারণে পালিয়ে বেড়ানো পরিচালকদের বাদ দিয়ে চার কোম্পানিতে নতুন পর্ষদ গঠন করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

কোম্পানিগুলো হচ্ছে- সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, এমারল্ড অয়েল ফ্যামিলিটেক্স (বিডি) লিমিটেড ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বিডি। এছাড়া খুব শিগগিরই ওষুধ খাতের কোম্পানি ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডেও নতুন পর্ষদ বসানো হবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

এই চার কোম্পানির মধ্যে এমডি ও চেয়ারম্যানসহ পরিচালকদের খুঁজে পাওয়া না যাওয়ায় ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বিডিকে মূল মার্কেট থেকে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে তালিকাচ্যূত করা হয়েছে। বাকি তিন কোম্পানি জেড ক্যাটাগরিতে রয়েছে।

বিষয় নিশ্চিত করেছেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ সামছুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকা, বিভিন্ন ইস্যুতে অনিয়মে জড়িয়ে থাকা কোম্পানি পরিচালকদের বাদ দিয়ে নতুন করে পর্ষদ গঠন করা হচ্ছে চার কোম্পানিতে। নতুন বোর্ড কোম্পানিগুলোকে ব্যবসায় আনতে তার জন্য কাজ করবে। কোম্পানিগুলোতে সুশাসন নিশ্চিত করবে। কোম্পানি রান করলে শেয়ারহোল্ডাররাও তাদের মুনাফা পাবেন বলে জানান তিনি।

গত বছর অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর ভালো পারফর্ম না করা কোম্পানিগুলোকে কয়েক দফা সর্তক করে। তারপরও কোনো উন্নতি না হওয়া ‘জেড’ ক্যাটাগরির থাকা কোম্পানিগুলোতে নতুন পর্ষদ গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

এরই অংশ হিসেবে প্রথমে কোম্পানিগুলোর পর্ষদ সদস্য পরিবর্তনের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জানতে চায় কমিশন। তারপর কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার কেনাবেচা, হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যেসব কোম্পানি ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে, কিংবা পর্ষদ পুনর্গঠন করেনি সেসব কোম্পানিকে এখন নতুন করে বোর্ড গঠনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

কোম্পানির তথ্য মতে, ২০১৩ সালে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত ফ্যামিলিটেক্সে বর্তমানে মাত্র দুজন পরিচালক রয়েছেন। কোম্পানিটির প্রধান উদ্যোক্তারা ঘোষণা ছাড়া শেয়ার বিক্রি করে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কোম্পানিটি চালু থাকলে দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে রয়েছে।

বস্ত্র খাতে ২০১৫ সালে তালিকাভুক্তির এক বছর পর থেকেই লোকসানে পড়ে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল। উদ্যোক্তা পরিচালকদের নূন্যতম ৩০ শত্যাংশ শেয়ার ধারণ করতে না পারার পাশাপাশি বড় ধরনের লোকসানে থাকায় ২০১৭ সাল থেকে কোম্পানিটি জেড ক্যাটাগরিতে রয়েছে।

এদিকে বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমারল্ড অয়েলের উদ্যোক্তা-পরিচালকরা। বাজারে পণ্যের চাহিদা থাকলেও ২০১৮ সাল থেকে কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে কোম্পানিটিও বড় লোকসানের পড়েছে।

এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকার পাশাপাশি কোম্পানির এমডি ও চেয়ারম্যানসহ কোম্পানির কর্মকর্তাদের খুঁজে না পাওয়ায় তালিকাচ্যুত করে ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হয়েছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে। এই কোম্পানির সবগুলো উড়োজাহাজ ২০১৬ সাল থেকে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। সম্প্রতি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এই উড়োজাহাজগুলো নিলামে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই কোম্পানিটিতে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করছে কমিশন।

এছাড়াও ওষুধ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইন্দো বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালকদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এরইমধ্যে একজন ভুক্তভোগী কোম্পানিটির পরিচালকদের বিরুদ্ধে বরিশাল মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে বিএসইসির কাছেও অভিযোগ এসেছে।

নতুন পর্ষদ প্রথমে কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী করার জন্য উদ্যোগ নেবে। এরপর যারা এ প্রতিষ্ঠানগুলোর দুরবস্থার জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে কমিশন।

এমআই/এইচকে

Link copied