পুঁজিবাজারে হাসছে প্রকৌশল ও বিমার ফুল

মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতায় দিনভর সূচক ওঠানামার মধ্যদিয়ে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (১৬ জুন) দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। মঙ্গলবারের মতোই এদিন ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ার বিক্রি করেছেন বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী। এই দুই খাত ছাড়াও আজ নতুন করে বস্ত্র খাতের শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল। আর তাতে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বস্ত্র খাতের শেয়ারের দাম কমেছে।
তবে এই সময়ে বিপরীত চিত্র ছিল প্রকৌশল ও বিমা খাতের কোম্পানির শেয়ারের। এই দুই খাতের শেয়ার কেনায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কমতি ছিল না। ফলে বুধবার এই বাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের ৫০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম আর অপরিবর্তিত রয়েছে একটি কোম্পানির শেয়ার দর। আর প্রকৌশল খাতের ৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৫টির, কমেছে ১৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
আর সেই ধাক্কায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেড়েছে ৬৬ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ও লেনদেন।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে সব চেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইফাদ অটোস, বিএসআরএম স্টিলসহ প্রায় সব কোম্পানি করপোরেট করের পাশাপাশি উৎসে কর এবং কর রেয়াত সুবিধা পেয়েছে। ফলে আগামী বছরের কোম্পানির মুনাফা বাড়বে। তাতে বিনিয়োগকারীরা ভালো লভ্যাংশ পাবেন।
এছাড়াও বিমা কোম্পানিগুলো গত বছরের তুলনায় এ বছর আরও ভালো মুনাফা দিয়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও মুনাফা ভালো হয়েছে। তাই বিনিয়োগকারীরা প্রকৌশল ও বিমার তরীতে উঠছেন। এই খাতকে নিরাপদ মনে করছেন।
ডিএসইর তথ্য মতে, বুধবার (১৬ জুন) ডিএসইতে মোট ৩৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৮২টির, কমেছে ১৫৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির। তাতে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১০৯ কোটি ৬৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৩২ কোটি ৫৮ লাখ ৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে।
বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়ায় এদিন আগের দিনের চেয়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৯ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৪ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৮৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এরপর বেশি লেনদেন হয়েছে পাইওনিয়ার ইনস্যুরেন্সের শেয়ার। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, বিবিএস ক্যাবলস, ওরিয়ন ফার্মা, কনফিডেন্স সিমেন্ট, বিএসআরএস লিমিটেড, গ্রিন ডেল্টা, রিপাবলিক ইনস্যুরেন্স, লুব-রেফ এবং সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্স লিমিটেড।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৬ পয়েন্ট বেড়ে ১৭ হাজার ৫৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১৫৬টির, কমেছে ১২৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির শেয়ারের দাম। এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৯ কোটি ১৭ লাখ ১৭ হাজার ৪৫১ টাকা।
এমআই/এইচকে