হিমাদ্রির পরিশোধিত মূলধন দ্বিগুণ করার প্রস্তাবে বিএসইসির অসম্মতি

পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কারসাজির ঘটনা ঘটেছিল এসএমই খাতে তালিকাভুক্ত হিমাদ্রি লিমিটেডে। অভিহিত মূল্য ১০ টাকার এই শেয়ারটির দাম একসময় কারসাজির মাধ্যমে প্রায় ৯ হাজার টাকায় উঠেছিল। ছোট মূলধনী এই কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন মাত্র ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সম্প্রতি এই মূলধন একলাফে দ্বিগুণ করার উদ্যোগ নিয়েছিল কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে ১০০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানির এই সিদ্ধান্তে অসম্মতি জানিয়েছে। ফলে পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সর্বোচ্চ কারসাজি হওয়া এই কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন বাড়ছে না।
বিএসইসি জানিয়েছে, কোম্পানির প্রস্তাবিত স্টক লভ্যাংশের মাধ্যমে পরিশোধিত পুঁজি বাড়ানো বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্ভব নয়। পাশাপাশি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোম্পানির অবাস্তব সম্পদ, করের দায় এবং মূলধন রিজার্ভ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিশন। এসব কারণে বড় এই স্টক লভ্যাংশের অসম্মতি জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১০০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের পাশাপাশি ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে কোম্পানি কতৃপক্ষ। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৮১ পয়সা। আগের অর্থবছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৪২ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২২ টাকা ৮৭ পয়সায়। আগের অর্থবছর শেষে যা ছিল ৫২২ টাকা ১৯ পয়সা।
পুঁজিবাজারের ইতিহাসের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের কোন শেয়ারে সর্বোচ্চ দাম বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছে এই শেয়ারে। কারসাজির মাধ্যমে দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে এক পর্যায়ে শেয়ারটির দর ৮ হাজার ৯৪১ টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কারসাজিতে জড়িত থাকায় এক ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বিএসইসি। যদিও কারসাজিকারকরা তখন ৮২ কোটি টাকার মুনাফা লুফে নিয়েছিল।
এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর লক্ষ্যে ঘোষিত এই বড় স্টক লভ্যাংশকে কেন্দ্র করে কোম্পানির শেয়ারদর ৫০৪ টাকা থেকে ৭২৯ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। গতকাল লেনদেন শেষে শেয়ারদর ৬৮৮ টাকা ৯০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। আজ বুধবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত শেয়ারদর প্রায় ৬ শতাংশ বা ৪১ টাকা বেড়ে ৭২৯ টাকা ৯০ পয়সায় উঠেছে।
এমএমএইচ/এমএসএ