৪১তম বিসিএস পরীক্ষা পেছানোর দাবি

৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছে একদল পরীক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মতো বিসিএস পরীক্ষার্থীদের টিকার আওতায় এনে তারপর পরীক্ষা নেওয়া দাবি তাদের। সোমবার (৮ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরেন একদল পরীক্ষার্থী।
তাদের দাবি, করোরা পরিস্থিতি এখনও এমন পর্যায়ে যায়নি যে, পৌনে পাঁচ লাখ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা হলে বসাবেন। বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজগুলোর আবাসিক হল খোলার পর শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় এনে পরীক্ষার তারিখ পুনঃনির্ধারণের দাবি তুলেছেন তারা।
গত এক মাসের করেনার পরিস্থিতির পরিসংখ্যান তুলে ধরে তারা বলেন, আমাদের এসব দাবি তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে পরীক্ষার পেছানোর দাবি জানিয়েছি। কিন্তু পিএসসি এতে কর্ণপাত করেনি। তাই আজ সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানাতে এসেছি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াসহী শামীম ওসমান বলেন, করোনা মোকাবেলায় সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে ঝুঁকি বিবেচনায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও হলগুলো বন্ধ আছে। এরকম পরিস্থিতিতে আগামী ১৯ মার্চ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ৪১তম বিসিএসের (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের শিক্ষার্থী, যারা আবাসিক হলে থাকি, তারা বেশ কিছু যৌক্তিক কারণে এ পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। তাই পরীক্ষার তারিখ হল খোলা ও টিকাদান কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় করে পুনঃনির্ধারণের দাবি জানান তারা।
পরীক্ষা পেছানোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে শামীম বলেন, করোনাভাইরাসের নতুন ধরণ ও সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার ‘ঝুঁকিতে পড়বে’। এ সময়ে চার লাখ ৭৫ হাজার বিসিএস পরীক্ষার্থী অভিভাবকসহ দেশজুড়ে ছুটোছুটি করলে দেশের সব জায়গায় পরিস্থিতি অবনতির সুযোগ সৃষ্টি হবে।
করোনাভাইরাসে এক বিসিএস পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর তথ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘একটি বিসিএসের কারণে আরও কিছু জীবন ঝুঁকিতে পড়বে না- এর নিশ্চয়তা কি? তবে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নির্দেশনায় চলমান টিকাদান কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা অচিরেই করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হল খোলার আগেই টিকাদান সম্পন্ন হবে। তাই মাত্র দুই মাস পরেই ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশে ৪১তম বিসিএস নেওয়া যেতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়াত ও আবাসন সমস্যার কথা তুলে ধরে শামীম বলেন, এসব সঙ্কট এড়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পরেই পরীক্ষা নেওয়া যৌক্তিক। ৪১তম বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের একদল শিক্ষার্থী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৩ জানুয়ারি ৪১তম বিসিএসের তারিখ ঘোষণা করে সরকারী কর্ম কমিশন (পিএসসি)। সে অনুযায়ী, ১৯ মার্চ (শুক্রবার) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবাসিক হল বন্ধ থাকায় ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে বেশ কয়েকবার মানববন্ধন করেছে। এছাড়া পিএসসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। তবে ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা ‘যথাসময়ে’ হবে বলেই জানিয়েছে পিএসসি।
এনএম/ওএফ