আইডিয়ালের আলোচিত আতিককে শোকজ

স্কুলের লিফট কেনাকাটায় দুর্নীতি করায় রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের আলোচিত সহকারী প্রকৌশলী আতিকুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (৯ অক্টোবর) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সই করা এক চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। এতে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।
শোকজের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, লিফট স্থাপনে গাফিলতি ও আর্থিক অনিয়মের কারণে তাকে শোকজ করা হয়েছে।
কারণ দর্শানো নোটিশে বলা হয়, গত ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে লিফট স্থাপন করার কথা ছিল, যা এখনো সম্পন্ন করেননি। এছাড়া লিফট প্রদানকারী কোম্পানির সঙ্গে যে চুক্তি করেছেন তা অতি দুর্বল। লিফট স্থাপনের কাজে শিথিলতা ও বিলম্ব করেছেন। লিফটের সকল কাজ আপনার উপর ন্যস্ত ছিল কিন্তু আপনি বড় অংকের দর প্রাক্কলন করে বিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান। পূর্ত সিভিল ইলেকট্রিক কাজ দ্রুত শেষ করার কথা থাকলেও ইচ্ছাকৃতভাবে আপনি দেরি করেছেন। আপনার চাহিদা মোতাবেক অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা না পাওয়ার কারণে লিফটের কাজ নিরুৎসাহিত করেছেন, যে কারণে কাজে বিলম্ব হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এ কারণে দায়িত্বহীন কাজের ফলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টিসহ প্রতিষ্ঠারে সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ করা, স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করা, প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করা, পেশাগত অদক্ষতা, আর্থিক অনিয়ম, দায়িত্ব পালনে অবহেলাসহ নিয়োগপত্রের শর্ত ভঙ্গ করেছেন। এ ধরনের দায়িত্বহীন আচরণের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন বেসরকারি বিদ্যালয়ের চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না পত্র পাওয়ার তিন কর্ম দিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হলো।
আইডিয়াল স্কুলের ভর্তি-নিয়োগ বাণিজ্য, কেনাকাটাসহ নানা অনিয়মের দায়ে অভিযুক্ত আতিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্ত চলছে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি বাণিজ্য, প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটা ও সংস্কারকাজ করাসহ বিভিন্ন খাত থেকে নানা উপায়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে আতিকুর রহমান খানের বিরুদ্ধে।
স্কুলের দুর্নীতির টাকায় রাজধানীর রামপুর, বনশ্রীতে এভারকেয়ার স্কুল এবং ভিশন ৭১ নামে একটি হাউজিং ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি খুলেছেন তিনি। তার এই কোম্পানিতে সাবেক অধ্যক্ষ শাহান আর বেগমের ছেলের যোগসূত্র তদন্ত করছে দুদক।
আরও পড়ুন
প্রায় একই ধরনের অভিযোগে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে আরও একটি অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। এই কোম্পানিতে একজন পরিচালক হিসেবে রয়েছেন আতিকুলের স্ত্রী নাহিদা ইসলাম নিপা।
২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির অভিযোগে প্রথমবারের মতো আতিকুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তখন গণমাধ্যমে নিজেকে নিরপরাধ দাবি করে আতিকুর বলেছিলেন, আমি কৃষকের ছেলে, আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। ভর্তি বাণিজ্যের যে অভিযোগের কথা বলছেন সেটা আমি করি না। অন্য কেউ করে থাকতে পারে। আমি চুক্তিভিত্তিক চাকরি করি।
এনএম/এমএসএ