ছাত্রদের সুবিধায় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে : ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ

চলমান তাপপ্রবাহে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের স্বস্তি ও সুবিধার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ। একইসঙ্গে ক্লাস চলাকালীন সময়ে গরমে যদি কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে তাৎক্ষণিক তার চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য ডাক্তার, মেডিকেল সেন্টার এবং বিশ্রামকক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে রাজধানীর এই কলেজ ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ ছুটির পর সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো কলেজ প্রাঙ্গণ। মূল ফটক থেকেই শিক্ষার্থীরা লাইন ধরে ক্লাসের জন্য মূল ভবনে প্রবেশ করছেন। অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকরা বিভিন্ন তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এর আগে ভোর থেকেই পুরো কলেজ, ক্লাসরুম ঝাড়ু দিয়ে এবং শিক্ষার্থীদের বসার আসন মুছে পরিষ্কার করা হয়।
তাপপ্রবাহ ও গরমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনায় কোন বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে জানতে চাইলে কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোজা এবং ঈদের ছুটির পর গরমের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঁচ দিনের অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। যা সাপ্তাহিক ছুটিসহ ৭ দিন হয়েছে। দীর্ঘ ছুটির পর আজ কলেজ খোলার প্রথম দিনেই আমরা বেশ চমৎকারভাবেই কার্যক্রম শুরু করেছি। গরমে শিক্ষার্থীদের স্বস্তির জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই। এর বাইরে পুরো কলেজের সবগুলো ফ্যান আগেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। যেগুলোতে সমস্যা পাওয়া গেছে কিংবা কম ঘুরে সেগুলো পরিবর্তন করেছি। নিরাপদ খাবার পানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। এছাড়া গরমের প্রকোপ থেকে বাঁচতে সব শিক্ষার্থীকে হাফ স্লিভ (হাফ হাতা) শার্ট পরে আসার জন্য এবং শ্রেণিকক্ষে ফাঁকা হয়ে বসার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
অধ্যক্ষ বলেন, আমাদের শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের মনোবল বাড়াতে ভূমিকা পালন করবেন। কিছু সময় পর পর মাইকে ঘোষণা দিয়ে পানি পান করার বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের ব্যাগে ছোট বোতলে পানি, খাবার স্যালাইন কিংবা জুস যেন তারা রাখে সেটিও বলা হয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করব শ্রেণি কার্যক্রমকে নির্ভীক এবং সুন্দর করার জন্য।
অধ্যাপক ইউসুফ আরও বলেন, তবে একথা অনস্বীকার্য যে, প্রকৃতি যখন বৈরী থাকবে তখন আমরা যেসব কার্যক্রম হাতে নেব সেগুলো কতটা কাজে আসবে সেটিও চিন্তার বিষয়। কোনো শিক্ষার্থী যেন অসুস্থ না হয়ে পড়ে সেদিকে আমরা খেয়াল রাখব। এবং কেউ যদি অসুস্থ হয়ে যায় তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তার চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের জন্য ডাক্তার, মেডিকেল সেন্টার, রেস্ট রুম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেকোনো সমস্যায় তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীদের সেবা-শুশ্রূষা এবং হাসপাতালে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।

চলমান তাপপ্রবাহ দেশের শিক্ষা খাতে বড় ধরনের কোনো প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরমের কিছু প্রভাব তো থাকেই। একজন শিক্ষার্থী যদি স্বস্তির সঙ্গে থাকতেই না পারে তাহলে তার পড়াশোনা হবে না। সেটি বাসা হোক বা প্রতিষ্ঠান হোক। প্রচণ্ড গরমে শিক্ষার্থীরা যে কিছুটা হাঁপিয়ে উঠবে না সেটি বলা যাবে না। তবে আমরা শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতে এবং মনোবল বাড়াতে ব্যবস্থা নিব। এবিষয়ে অভিভাবকদেরও বাড়িতে খেয়াল রাখার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মূলত, তীব্র দাবদাহের মধ্যে রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাক-প্রাথমিক বাদে সব স্তরের ক্লাস শুরু হচ্ছে। যদিও সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।
সংগঠনটি বলছে, সরকারের সিদ্ধান্ত মানতে সবাই বাধ্য। এ সিদ্ধান্ত মানতে গিয়ে যদি কোনো শিক্ষার্থীর শারীরিক কোনো ক্ষতি বা জীবন বিপন্ন হয়, তবে এর দায়ভার সম্পূর্ণ সরকার ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে।
আরএইচটি/জেডএস